অবশেষে ন'দিনের মাথায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল অরুণাচল প্রদেশের নিখোঁজ পাঁচ যুবকের পরিবার।শনিবার তাঁদের ভারতীয় সেনার হাতে তুলে দিল চিন।
অসমের তেজপুরে জনসংযোগ আধিকারিক (প্রতিরক্ষা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল হর্ষবর্ধন পাণ্ডে বলেন, ‘যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাজকর্মের পর ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কিবিথুতে পাঁচজনকেই নিজেদের দায়িত্বে নিয়েছে ভারতীয় সেনা।’ তবে এখনও বাড়ি ফেরা হচ্ছে না ওই পাঁচ যুবকের। করোনাভাইরাস বিধি মেনে তাঁদের ১৪ দিনের নিভৃতবাস বা কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তারপর তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবেন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর জঙ্গলে একসঙ্গে শিকারে গিয়ে অরুণাচল প্রদেশের ভারত-চিন সীমান্তে উচ্চ সুবানসিরি জেলা থেকে পাঁচ যুবক নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। বাকি দু'জন ফিরে এসে পরিবারকে জানান, সেরা-৭ (সেনার টহলদারি এলাকা, নাচোর ১২ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত) থেকে পাঁচজনকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে চিনা সেনা। ম্যাকমোহন লাইন বরাবর শেষে প্রশাসনিক সার্কেল হল নাচো।
সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে অরুণাচল প্রদেশের পুলিশ। অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তে চিনা সেনার ছাউনিতে হটলাইনে বার্তা পাঠায় ভারতীয় সেনা। তারইমধ্যে সোমবার চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান মন্তব্য করেন, অরুণাচল প্রদেশকে কখনও ভারতের অংশ বলে স্বীকৃতি দেয়নি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিক) যে ঘটনার কথা বলছেন, সে বিষয়ে আমি জানি না।’
চিনা বিদেশ মন্ত্রকের সেই মন্তব্যের পর পাঁচ যুবককে নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ে। সঙ্গে যোগ হয় পূর্ব লাদাখ সীমান্তে দু'দেশের চাপানউতোর। সেই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানান, ওই পাঁচজন চিনে আছেন এবং তাঁদের ফেরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।
তারপর শুক্রবার জানানো হয়, শনিবার ভারতে ফিরবেন ওই পাঁচ যুবক। সেনায় কুলির কাজ করতেন তাঁরা। শিকার করতে গিয়ে তাঁরা ভুলবশত সীমান্ত পেরিয়ে তিব্বতে চলে গিয়েছিলেন বলে জানানো হয়। তবে এটা কোনও নতুন ঘটনা নয় বলে জানিয়েছে সেনা। বরং অরুণাচল প্রদেশে ভারত-চিন সীমান্তের কাছে বসবসকারী যুবকদের ক্ষেত্রে চলতি বছর এই নিয়ে তৃতীয়বার এই ঘটনা ঘটেছে। যাঁরা 'দুঃসাহসিক অভিযান'-এ অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করেছেন।
সেনার তরফে বলা হয়েছে, ‘নিখোঁজ স্থানীয়দের সন্ধান পেতে এবং তাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে আনতে বরাবর সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে ভারতীয় সেনা। এই ঘটনাটি-সহ উচ্চ সুবানসিরি এবং পশ্চিম সিয়াং জেলায় চলতি বছর এরকম তৃতীয় ঘটনা ঘটেছে। অতীতে ভারতীয় সেনার লাগাতার প্রচেষ্টা এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে তাঁদের সবাইকে সুরক্ষিতভাবে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’