হরিয়ানার একটি স্কুলে ৫০ জনেরও বেশি ছাত্রীর যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠল অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানার জিন্দ জেলার একটি সরকারি স্কুলে। এই অভিযোগ পেয়ে হরিয়ানার রাজ্য মহিলা কমিশন পুলিশকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলে। তার ভিত্তিতে ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে টালবাহানার অভিযোগ তুলেছে রাজ্য মহিলা কমিশন। অভিযোগ, বিষয়টি পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছিল ১৪ সেপ্টেম্বর। কিন্তু, ৩০ অক্টোবর এই বিষয়ে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এরপরেই অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক। এই ঘটনায় ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে শিক্ষা দফতর।
আরও পড়ুন: ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার পুলিশের
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অধ্যক্ষের বয়স ৫৫ বছর। স্কুলের ৬০ জন নাবালিকা ছাত্রী অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানিয়েছিল রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছে। এর মধ্যে ৫০ জন ছাত্রী যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিল। বাকি ১০ জন ছাত্রী অভিযোগে জানিয়েছিল তারা শিক্ষকের এই কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানত। এর পাশপাশি স্কুল শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অভিযুক্ত ছাত্রীদের ফোন করে অশ্লীল কথা বলার পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করতো। এর জন্য অধ্যক্ষের কাছে তিনটি ফোন ছিল, যা তার পরিবারের কারও জানা ছিল না। অভিযোগ, অধ্যক্ষ নিজের অফিসে ডেকে ছাত্রীদের যৌন হেনস্তা করত। গত ১৩ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছিল রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেণু ভাটিয়া। এরপর তিনি বিষয়টি পুলিশের কাছে পাঠিয়েছিলেন। তবে মামলা রুজু করতে দেরি করায় পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ রাজ্য মহিলা কমিশন। এরপর রাজ্য মহিলা কমিশনের তরফে জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তার ভিত্তিতে ৩০ অক্টোবর মামলা রুজু করে পুলিশ।
তবে অভিযুক্তকে শিক্ষককে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্ত বর্তমানে পলাতক। জানা গিয়েছে, ছাত্রীরা জেলা শিক্ষা আধিকারিকের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। এই অবস্থায় মহিলা কমিশন জেলা শিক্ষা আধিকারিকের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনায় আরও একজন শিক্ষিকার নাম জড়িয়েছে, যিনি এ বিষয়ে অধ্যক্ষকে মদত দিতেন বলে জানা গিয়েছে। সেবিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কমিশনের তরফে হরিয়ানা পুলিশের ডিজি এবং জিন্দের পুলিশ সুপারকে অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, শুধু এই স্কুলেই নয়, এর আগে অধ্যক্ষ যে স্কুলে ছিল সেখানেও ছাত্রীদের যৌন হেনস্তা করেছিল। তা সত্ত্বেও শিক্ষা দফতরের তরফে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা সহ পকসো আইনের অধীনে মামলা নথিভুক্ত করেছে।