গত পাঁচ বছরে ভারতের হাইকোর্টগুলিতে নিযুক্ত হওয়া বিচারপতিদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই সাধারণত শ্রেণিভুক্ত। মাত্র ২.৫ শতাংশ বিচারপতি অনগ্রসর এবং সংখ্যালঘু শ্রেণিভুক্ত। একটি প্রশ্নের উত্তরে সংসদের অধিবেশনে এমনই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় আইন এবং বিচার মন্ত্রক। সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত এই প্রশ্ন করেছিলেন সাংসদ তথা মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। সেই প্রশ্নের উত্তরে এমন তথ্য দিয়েছে কেন্দ্রীয় আইন এবং বিচার মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: বিদেশ ফেরত আইনজীবী, বিচারকদের ভাবনা চিন্তা ‘ভারতীয়’ রাখার বার্তা কিরেন রিজিজুর
সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনে ওআইসি প্রশ্ন তোলেন, গত পাঁচ বছরে দেশের সমস্ত হাইকোর্টে নিযুক্ত বিচারপতিদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ সাধারণ শ্রেণিভুক্ত কি না। এনিয়ে বিচারব্যবস্থায় অনগ্রসর এবং সংখ্যালঘুদের অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিনিধিত্ব নিয়ে সওয়াল করেন ওয়াইসি। তিনি বলেন, ২০১৮ সাল থেকে মোট ৫৩৭ জন বিচারপতির মধ্যে মাত্র ২.৬ শতাংশ বিচারপতিকে অন্যান্য শ্রেণি থেকে নিযুক্ত করা হয়েছে। এটা কী সত্যি? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাংসদ। সবশেষে তিনি প্রশ্ন করেন, বিচারক নিয়োগে কলেজিয়াম পদ্ধতি চালু হওয়ার পর পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে কি না।
মন্ত্রক এর উত্তরে জানায়, সুপারিশকারীদের দ্বারা পাওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সাল থেকে নিযুক্ত ৬০৪ জন হাইকোর্টের বিচারপতির মধ্যে ৪৫৮ জন বিচারপতি সাধারণ শ্রেণির অন্তর্গত, ১৮ জন বিচারপতি এসসি বিভাগের, ৯ জন এসটি বিভাগের অন্তর্গত, ৭২ জন বিচারপতি ওবিসি বিভাগের অন্তর্গত। এছাড়াও, ৩৪ জন বিচারপতি রয়েছেন যাঁরা অন্যান্য শ্রেণির।
মন্ত্রকের উত্তরে আরও বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ ভারতের সংবিধানের ১২৪,২১৭ এবং ২৪৭ অনুচ্ছেদের অধীনে নিয়োগ করা হয়। কোনও জাতি বা শ্রেণির জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা এখানে নেই। তবে বিচারপতি নিয়োগের জন্য প্রস্তাব পাঠানোর সময় সামাজিক বৈচিত্র্য নিশ্চিত করার জন্য তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি, সংখ্যালঘু এবং মহিলাদের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য সরকার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিদের অনুরোধ করে থাকে।
উত্তরে আরও স্পষ্ট করা হয়েছে যে সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগের জন্য একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে চলা হয়। সে ক্ষেত্রে সরকার শুধুমাত্র সেই সমস্ত ব্যক্তিদেরই বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন যাঁদের সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম থেকে সুপারিশ করা হয়।