১৯৯৮ সালে এসেছিল মামলার রায়। বর্তমানে মামলাটি ঘুরপাক খাচ্ছে একটি প্রশ্নকে ঘিরে। সংসদ বা রাজ্যের বিধানসভায় সাংসদ বা বিধায়করা যদি ঘুষ নিয়ে ভাষণ বা ভোট দেন তাহলে কি সেই মামলায়, তাঁরা আইনি ‘রক্ষাকবচের’ জোরে ফৌজদারি কোর্টে সওয়াল জবাব থেকে দূরে থাকতে পারবেন? ১৯৯৮ সালের পিভি নরসিংহ রাও বনাম রাষ্ট্রের একটি মামলা চলেছিল। সেই মামলার রায়কে ফের একবার বিবেচনা করবে সুপ্রিম কোর্ট। আর সেই কারণেই এই মামলা যাচ্ছে ৭ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে। যে বেঞ্চের প্রধান হিসাবে থাকছেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
দেশের সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলায় যে রায় দিয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছে, ঘুষ নিয়ে সংসদে বা বিধানসভায় ভাষণ বা ভোট দিলে কোনও সাংসদ বা বিধায়ক ফৌজদারি কোর্টে সওয়াল জবাব থেকে পাবেন ‘রক্ষাকবচ’। সংবিধানের ১০৫ ধারায় সংসদের কক্ষ এবং এর সদস্য ও কমিটির ক্ষমতা, বিশেষাধিকার ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। সংবিধানের ১০৫(২) ও ১৯৪ এর (২) ধারার আওতায় সাংসদ ও বিধায়কদের এই ‘রক্ষাকবচ’ সম্পর্কিত সাংবিধানিক বিধি খতিয়ে দেখার পর্ব চলবে সুপ্রিম কোর্টে। এই ১০৫ (২) ধারা রয়েছে সংসদের সাংসদদের সম্পর্কিত ও ১৯৪ (২) ধারা রয়েছে বিধানসভার বিধায়কদের সম্পর্কিত। উল্লেখ্য, যে ঘটনা নিয়ে এই গোটা নিয়মটি ফের আলোয় আসে, তা ছিল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সীতা সোরেনকে ঘিরে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সংসদীয় ভোটে ঘুষ নিয়ে তিনি ভোট দিয়েছেন। ২০১২ সালে রাজ্যসভার এক ভোটে ভোটদান গিরে সীতা সোরেনের বিরুদ্ধে মামলা ওঠে। এরপর তা নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ আসে। তখনই সীতা সোরেন প্রসঙ্গ তোলেন ১৯৯৮ সালের নরসিংহ রাও বনাম রাষ্ট্রের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশের। সেই অনুযায়ী তিনি অনাক্রম্যতা পান। এর আগে সীতার শ্বশুরমশাই তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চার শিবু সোরেন ও তাঁর কয়েকজন সঙ্গীর বিরুদ্ধেও সংসদের ভোটে ঘুষ নেওয়া নিয়ে অভিযোগ ছিল। সেই মামলা ১৯৯৩ সালের। যেখানে ঘুষ নিয়ে তাঁরা নরসিংহ রাও সরকারের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেন বলে অভিযোগ ছিল।
বুধবারই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে, টাকার বিনিময়ে আইনসভায় নির্দিষ্ট বিষয়ে ভাষণ, বা ভোটাভুটিতে অংশ নেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সাংসদ-বিধায়কের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা যাবে কি না, সেই বিষয়টি ফের বিবেচনা করবে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে যে, এই মামলা পুনরায় বিবেচনা করবে সুপ্রিম কোর্টের ৭ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ।