পশ্চিমী দেশে উচ্চশিক্ষা চলাকালীন ফুড ডেলিভারির মতো পার্ট টাইম কাজ করেন পড়ুয়ারা। কিন্তু এ দেশে এখনও শিক্ষিত কাউকে এ ধরনের কাজে ভাবতে পারেন না অনেকেই। তাছাড়া কাজের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে বৈষম্যটাও চোখে পড়ার মতো।
তবে, সমাজের এই আদ্যিকালের ভাবনাগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন কলকাতার সঙ্গীতা। বেলঘরিয়ায় জোম্যাটোর ডেলিভারি পার্টনার হিসাবে সগর্বে কাজ করছেন তিনি। 'আমার কাছে লোক না ঠকিয়ে যে পেশায় অর্থ উপার্জন করা যায় সেটাই সম্মানের,' ফেসবুকে নিজের সেই ভাবনার কথাই লিখেছেন সঙ্গীতা। ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে সঙ্গীতার ছবিসহ পোস্ট।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থিয়েটার ও নাট্যশিল্পে এমএ করেছেন সঙ্গীতা। থিয়েটার, অভিনয়, ফ্রিল্যান্স অ্যাঙ্কারিং ইত্যাদির সঙ্গে তিনি জড়িত। সামাজিক কাজেও এগিয়ে যান। সেই সঙ্গেই, উপার্জনের রাস্তা হিসাবে বেছে নিয়েছেন জোম্যাটোকে। তবে এর মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতিতে নাট্যকর্মী ও সাধারণের পাশেও দাঁড়াতে চান বলে জানিয়েছেন সঙ্গীতা।
তবে, এই লাল ইউনিফর্ম পরতে গিয়েও সঙ্গীতাকে 'তথাকথিত এলিট সমাজের' কাছে কম কথা শুনতে হয়নি। বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভাল হওয়া সত্ত্বেও কেন তিনি ডেলিভারির কাজ করছেন, তাই নিয়ে প্রশ্ন করেছেন অনেকে। এমএ করে কেন ডেলিভারির কাজ বেছে নিলেন, সেই নিয়েও প্রশ্ন করা হচ্ছে, জানিয়েছেন সঙ্গীতা। তবে, তাঁদেরকে নিজের পোস্টেই জবাব দিয়েছেন তরুণী।
'থিয়েটার থেকে যে নৈতিক শিক্ষা পেয়েছি সেটাই বলছি, আমার কাছে লোক না ঠকিয়ে যে পেশায় অর্থ উপার্জন করা যায় সেটাই সম্মানের,' সাফ জবাব স্পষ্টবাদী সঙ্গীতার। দেখুন সঙ্গীতার সেই ফেসবুক পোস্ট।
এখনও পর্যন্ত ফেসবুকে ২১০০-রও বেশি শেয়ার হয়েছে সঙ্গীতার পোস্টটি। প্রায় ৫ হাজার রিয়্যাক্টস। কমেন্টে সঙ্গীতাকে সমর্থন করে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। সত্ পথে করা কোনও কাজই ছোট নয়, বলছেন নেটিজেনরা।
সঙ্গীতার এই পোস্ট যে ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে আরও অনেককে সমাজের তোয়াক্কা না করে স্বাবলম্বী হতে অনুপ্রাণিত করবে, তা বলাই বাহুল্য।
তাঁর পোস্ট এত মানুষকে অনুপ্রেরণা দেওয়ায় আপ্লুত সঙ্গীতা। তবে, করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক কাজের বিষয়েই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন তিনি। সে বিষয়েও নিজের প্রোফাইলে পোস্ট করেছেন তরুণী।