এবার পেট্রল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এবার সংসদের ভিতরেই সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার অধিবেশন চলাকালীন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীকে অভিষেক প্রশ্ন করেন, পেট্রোল, ডিজেলের ওপর থেকে কী করের হার কমাবে কেন্দ্রীয় সরকার। তৃণমূল সাংসদের এই প্রশ্নের উত্তর ঠিকভাবে দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী। তবে সরকারের থেকে যে উত্তর মিলেছে, তা থেকে স্পষ্ট, সরকারের উন্নয়ন ও পরিকাঠামো তৈরিতে পেট্রোল, ডিজেলের থেকে প্রাপ্ত কর খুবই প্রয়োজন।
এদিন তৃণমূল সাংসদ ছাড়াও এই একই প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূলের আরেক সাংসদ নুসরত জাহানও। অভিষেকের দেওয়া প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি জানান, সরকারের আর্থিক অবস্থা ও সম্পদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে পেট্রোল বা ডিজেলের ওপর করের হার পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখনকার অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে পরিকাঠামো ও উন্নয়নমূলক খাতে খরচ জোগানোর জন্যই কর বসানো হয়েছে। পরিসংখ্যান তুলে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রতি লিটার পেট্রোলে ৩২ টাকা ৯০ পযসা কর সংগ্রহ করে কেন্দ্র। এরমধ্যে ১ টাকা ৪০ পয়সা শুল্ক থাকে। সড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়নে সেস নেওয়া হয় ১৮ টাকা ও কৃষি উন্নয়নে সেস নেওয়া হয় ২ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়াও লিটার পিছু ১১ টাকা বিশেষ শুল্ক আদায় করা হয়। একইসঙ্গে ডিজেলের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লিটার পিছু ৩১ টাকা ৮০ পয়সা কেন্দ্র কর নেয় বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেন, এখন আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই পেট্রোল ও ডিজেলের দাম নির্ধারণ করে তেল সংস্থাগুলি। সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, যেখানে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে প্রতি ব্যারল অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ১৯.৯০ ডলার, সেখানে ২০২১ সালে ব্যারল পিছু পেট্রোলের দাম দাঁড়ায় ৬৩.৪০ ডলার। জুন মাসে তা আরও বেড়ে হয়েছে ৭১.৯৮ ডলার। এতকিছু বললেও সাধারণ মানুষের ওপর থেকে করের বোঝা কবে কমবে, তার কোনও স্পষ্ট দিশা দেখাতে পারল না কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিন তৃণমূল ছাড়াও এই একই ধরনের প্রশ্ন তোলেন তামিলনাডুর সিপিআইয়ের সাংসদ এস সেলভারাজ, আইইউএমএল সাংসদ কে নাভাসকানি ও মহারাষ্ট্রের এক কংগ্রেস সাংসদও। সংসদের ভিতরে বিজেপি বিরোধিতার ক্ষেত্রে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার কথা জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তৃণমূল নেত্রী যখন দিল্লিতে তখন আগামী দিনে সরকারের ওপর চাপ যে নানা ইস্যুতে আরও বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।