লোকসভা নির্বানের দিনক্ষণ ঘোষণার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। পুরো দমে নির্বাচনের প্রস্তুতি চালাচ্ছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। সেই আবহে মাওবাদীদের নিশানায় রয়েছেন ছত্তিশগড়ের বিজেপি নেতারা। চলতি মাসে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলায় মাওবাদীদের হাতে খুন হয়েছেন ২ বিজেপি নেতা। এমন পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতাদের নিরাপত্তা বাড়ালো ছত্তিশগড় সরকার। ছত্তিশগড়ের বস্তার বিভাগের ৪৩ জন বিজেপি নেতার নিরাপত্তা বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। তাঁদের ওয়াই, ওয়াই প্লাস এবং এক্স ক্যাটাগরির নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে। এনিয়ে তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা। শুধু বিজেপি নেতাদের নিরাপত্তাই কেন বাড়ানো হল? অন্যদের কেন নিরাপত্তা দেওয়া হল না? তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন।
আরও পড়ুনঃ ছত্তিশগড়ে মাওবাদী হামলায় রকেটের মত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে
জানা গিয়েছে, এই নেতারা রাজ্যের বস্তার বিভাগের অধীনে সুকমা, বিজাপুর, দান্তেওয়াড়া, বস্তার, কাঙ্কের এবং নারায়ণপুর জেলার বাসিন্দা। ছত্তিশগড় পুলিশ এবং কমান্ডোরা তাঁদের নিরাপত্তা প্রদান করবে। এই ৪৩ জনের মধ্যে রয়েছেন দুজন মহিলা নেত্রী। বস্তার বিভাগের অধীনে দান্তেওয়াড়া জেলার একটি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন কমলা নাগকে এক্স ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
একইভাবে বিজেপির বিজাপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনিকা শাহকেও এক্স ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩৮ জন বিজেপি নেতাকে এক্স ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সুকমা বিজেপির জেলা সভাপতি ধনিরাম বারসেকে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক মহলের খবর, যে ৪৩ জন বিজেপি নেতাকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ৬ জন সুকমা জেলার, ১০জন বিজাপুর জেলার, ১৭ জন দান্তেওয়াড়া জেলার, ৪ জন বস্তার সদর দফতর জগদলপুর, ১জন কোন্ডাগাঁও জেলার, ১জন কাঙ্কের জেলার এবং ১জন নারায়ণপুর জেলার বাসিন্দা।
উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই নকশালদের নিশানায় রয়েছেন বিজেপি নেতারা। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বস্তার বিভাগে ৯ জন বিজেপি নেতা মাওবাদীদের হাতে খুন হয়েছিলেন। এই মাসে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুজন বিজেপি নেতাকে খুন করা হয়েছে। এর আগে বিধানসভা নির্বাচনেও বস্তার অঞ্চলের বিজেপি নেতাদের নিরাপত্তা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সময় বিজেপি নেতারা তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। কিন্তু, তা প্রত্যাখ্যান করেছিল তৎকালীন রাজ্য সরকার। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাদের নিরাপত্তা দিয়েছিল।
জানা গিয়েছে, বিজেপির বিজাপুর জেলা শাখার সভাপতি শ্রীনিবাস মুদালিয়ার মাওবাদীদের হুমকি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, অনেকেই জীবনের ভয়ে জেলা ছেড়ে পালিয়েছেন। তাই নেতাদের নিরাপত্তা দেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে, মাওবাদী হামলা নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেছে বিজেপি। ছত্তিশগড় বিজেপির মুখপাত্র সঞ্জয় পান্ডে জানান, কংগ্রেস সরকার ৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার সময় মাওবাদীদের শক্তি বেড়েছে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের মিডিয়া শাখার প্রধান সুশীল আনন্দ শুক্লা বস্তারের সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিরাপত্তা দাবি করেছেন।