সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর পোস্ট লাইক করা অপরাধ নয়। একটি মামলায় রায় দিতে গিয়ে এমনই পর্যবেক্ষণ এলাহাবাদ হাইকোর্টের। সেই সঙ্গে আদালত আরও জানিয়েছে, যদি সেই আপত্তিকর পোস্ট শেয়ার করা হয় বা সেটি পুনরায় পোস্ট করা হয় তাহলে সেটা অপরাধ হিসেবেই গণ্য হবে। বুধবার আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, এই ধরনের পোস্ট শেয়ার করা তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) আইনের ৬৭ ধারার অধীনে অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে এবং তা শাস্তিযোগ্য।
আরও পড়ুন: অভিষেকের মিম! মুর্শিদাবাদের ছাত্রের গ্রেফতারিতে প্রশ্নের মুখে বরাহনগরের পুলিশ
মামলার বয়ান অনুযায়ী, আগ্রার বাসিন্দা মহম্মদ ইমরান কাজী এফআইআর বাতিলের দাবিতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে আগ্রায় মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি সমাবেশ হয়েছিল। তাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন প্রায় ৮০০ জন। তবে সেই সমাবেশের পুলিশি অনুমতি ছিল না। পরে সেই সমাবেশ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছিল। সেই পোস্টে লাইক দিয়েছিলেন ইমরান কাজী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই পোস্টটি উস্কানিমূলক ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় তদন্তে নামে পুলিশ। ঘটনায় ইমরানের বিরুদ্ধে পুলিশ একটি ফৌজদারি মামলা নথিভুক্ত করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক পোস্ট লাইক করার জন্য তার বিরুদ্ধে একটি চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল। এরপর আগ্রার নিম্ন আদালত ইমরানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
সেই নির্দেশের পর উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ইমরান। মামলার শুনানি হয় বিচারপতি অরুণ কুমার সিং দেশওয়ালের বেঞ্চে। তিনি আইটি আইনের ধারা ৬৭ এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্যান্য ধারার অধীনে ইমরানের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর বাতিল করে দেন। এই মামলায় বিচারপতি বলেন, ‘আমি এমন কোনও উপাদান খুঁজে পাইনি যাতে আবেদনকারীকে কোনও আপত্তিকর পোস্টের জন্য দায়ী করা যায়। কারণ আবেদনকারীর ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে কোনও আপত্তিকর পোস্ট পাওয়া যায়নি। তাই, আবেদনকারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী কার্যবিধি চালানোর কোনও মানে নেই।’
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘ আইটি আইনের অধীনে আপত্তিকর বিষয়বস্তু পোস্ট করা একটি অপরাধ। তবে এ ক্ষেত্রে আবেদনকারী বেআইনি সমাবেশ নিয়ে অন্য একজনের পোস্ট লাইক করেছেন। একটি পোস্টে লাইক করা পোস্টটি প্রকাশ বা শেয়ার করার সমান হবে না। তাই পোস্টে শুধুমাত্র লাইক দিলে আইটি আইনের ৬৭ ধারা প্রযোজ্য হবে না।’