ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের শেষদিকটা খুব একটা ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ ছিল না। বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে মঝেমধ্যেই কটাক্ষ ছুড়তেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফলে নয়া জো বাইডেনের আমলে ভারতের প্রতি কীরকম মনোভাব নেওয়া হয়, সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন কূটনীতিবিদরা। শুরুটা অবশ্য ভালোই হল। নয়া আমলের দ্বিতীয় দিনেই একেবারে বন্ধুত্বের বার্তা দিল বাইডেন প্রশাসন।
দৈনিক সাংবাদিক বৈঠকে একটি প্রশ্নের জবাবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন স্যাকি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন অনেকবার ভারতে গিয়েছেন। ভারত এবং আমেরিকার নেতাদের মধ্যে দীর্ঘকালীন, দ্বিপাক্ষিক এবং সফল সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তিনি। আগামিদিনেও সেই ধারা বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’ তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে ভারতে আসেননি বাইডেন। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে শেষবার এদেশে পা রেখেছিলেন নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রমাণে ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন জেন। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই উনি (বাইডেন) বেছে নিয়েছেন। গতকাল (বুধবার) উনি (কমলা) শপথ নিয়েছেন। প্রথম ভারতীয়-আমেরিকান হিসেবে প্রেসিডেন্ট বা ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাবেন। এই দেশের সকলের জন্য অবশ্যই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। একইসঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ভিত্তি আরও মজবুত করবে।’
গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর কমপক্ষে একবার ফোনে কথা বলেছেন বাইডেন এবং মোদী। আজ (শুক্রবার) থেকে বন্ধুরাষ্ট্রগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ফোনালাপের মাধ্যমে শুরু করবেন বাইডেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে প্রথম কথা বলবেন। সেই তালিকায় মোদীও নিশ্চয়ই থাকবেন বলে ধারণা কূটনৈতিক মহলের।
ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণের পর বাইডেনকে ‘উষ্ণতম অভ্যর্থনা’ জানিয়েছেন মোদী। লেখেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য জো বাইডেনকে উষ্ণতম অভ্যর্থনা। ভারত-আমেরিকার কৌশলগত সম্পর্ককে মজবুত করতে তাঁর সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘সাফল্যের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য শুভকামনা করছি। একই বিষয়গুলির মোকাবিলা এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি ও সুরক্ষা আরও নিশ্চিত করার বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমরা।’ বাইডেনের আমলে ইন্দো-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নয়া উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়েও আশাপ্রকাশ করেন মোদী। তিনি লেখেন, ‘যৌথ মূল্যবোধের উপর নির্ভর করে আছেন ভারত-মার্কিন সম্পর্ক। দু'দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ, বহুমুখী দ্বিপাক্ষিক কর্মসূচি, ক্রমবর্ধমান আর্থিক যোগাযোগ এবং মানুষের মধ্যে প্রাণবন্ত যোগ আছে। ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে আরও উঁচুতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।’