মাঝ আকাশে ভেঙে গেল বিমানের জানলা। এর জেরে বিমানের গোটা একটা 'প্যানেল' উড়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে আলাস্কা এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৯ ম্যাক্স বিমানে। রিপোর্ট অনুযায়ী, অরেগনের পোর্টল্যান্ড থেকে বিমানটি টেকঅফ করার কিছু পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানটি ক্যালিফোর্নিয়ার ওন্টারিওতে যাচ্ছিল। তবে দুর্ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে বিমানচালক ফেরার পথ ধরেন। জরুরি অবস্থায় বিমানটিকে অবতরণ করানো হয় পোর্টল্যান্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বিমানে ১৭৪ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু ছিলেন। বিমানে থাকা ১৮০ জনের মধ্যে কেউই আহত হননি বলে জানা গিয়েছে। (আরও পড়ুন: নয়া বছরে আমেরিকায় আবারও 'হামলা' হিন্দু মন্দিরে, আঙুল উঠল খলিস্তানিদের দিকেই)
জানা গিয়েছে, বিমানটি যখন ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় ছিল, তখন আচমকাই একটি জানলা ভেঙে যায়। এরপর বিমানের ভিতরে বাতাসের চাপ বা কেবিন প্রেসার কমে যায়। এরপরই বিমানের একটা বড় অংশ আকাশে উড়ে যায়। বিমানযাত্রীরা এক বিকট আওয়াজ শুনতে পান সেই সময়। যে জানলাটি ভেঙে উড়ে যায়, তার পাশেই বসে ছিল এক শিশু। হাওয়ার টানে তার জামা ছিঁড়ে যায়। এদিকে ঘটনার সময় অনেক যাত্রীর হাতেই ফোন ছিল। সেই ফোনও উড়ে চলে যায় বিনানের সেই অংশ দিয়ে। হাওয়ার টান এমনই ছিল যে বিমানের ভাঙা অংশের পাশের একটি আস্ত আসন উড়ে চলে যায়। এই ঘটনায় স্বভাবতই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বরেই বোয়িং ৭৩৭-৯ ম্যাক্স বিমানকে বাণিজ্যিক উড়ানে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল মার্কিন এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। আর এরই মধ্যে এই বিমানে ঘটে গেল এমন ভয়াবহ ঘটনা। এর জেরে বিমানযাত্রীদের প্রাণও যেতে পারত। তবে বিমানচালকের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচেন সবাই। ঘটনাটি ঘটতেই পাইলট বিমানটিকে পোর্টল্যান্ডের দিকে ঘুরিয়ে দেন। এরপর পোর্টল্যান্ডে নিরাপদে অবতরণ করান বিমানটিকে। এদিকে ঘটনার পরই কেবিনে নেমে আসে অক্সিজেন মাস্ক। এদিকে বিমানটির যেই অংশ ভেঙে উড়ে যায়, তার একদম লাগোয়া আসনটি উড়ে বেরিয়ে যায় শূন্যে। তবে সৌভাগ্যবসত, সেই সময় সেখানে কেউ বসেছিলেন না।
এদিকে কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্ট নয়। এই বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে আলাস্কা এয়ারলাইন্স। উড়ান সংস্থা জানিয়েছে, ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারলে তা তারা শীঘ্রই প্রকাশ করবেন। উল্লেখ্য, বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের বিমান গত ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ভয়াবহ দু'টি দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল। এর জেরে মোট ৩৪৬ জন যাত্রীর মৃত্যু ঘটেছিল। এরপর বহু দেশে এই বিমানটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।