মায়ের কাছে বকুনি খেয়ে শিশু অবস্থাতে অভিমানে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল দুই ভাইবোন। ১৩ বছর পর আবার তারা ফিরে এল। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের আগ্রার। দুই ছেলে মেয়েকে ফিরে পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আনন্দে আত্মহারা অভিভাবক সহ পরিবারের সকলেই। ২০১০ সালে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। মেয়ের নাম হল রাখি এবং ছেলের না বাবলু। তারা যখন বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল সেই সময় তাদের বয়স ছিল যথাক্রমে ৯ ও ৬ বছর।
আরও পড়ুন: দিদির বিয়ের জন্য জমানো টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে উধাও নাবালিকা, উদ্ধার করল পুলিশ
জানা গিয়েছে, রাখি এখন স্নাতক উত্তীর্ণ। বর্তমানে দিল্লিতে একটি কোম্পানিতে কাজ করেন তিনি। এখন তিনি যুবতী। অন্যদিকে, তার ভাই বাবলু বেঙ্গালুরুতে একটি সংস্থায় কাজ করে। ১৩ বছর আগে বাসন না ধোয়া নিয়ে মা নিতু তাদের বকাঝকা করার পাশাপাশি মারধর করেছিলেন। সেই অভিমানে রাখি ও বাবলু বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু, সেই সময় দিন মজুরের কাজে বেরিয়েছিলেন নিতু। পরে তিনি ফিরে এসে ছেলে ও মেয়েকে দেখতে না পেয়ে আত্মীয়দের কাছে তার সন্তানদের খোঁজ করেছিলেন। কিন্তু, তাদের কোথাও পাওয়া যায়নি। ক্লান্ত হয়ে শেষে তিনি পুলিশের কাছে নিখোঁজের অভিযোগও দায়ের করেন। বছরের পর বছর ধরে নিতু তার সন্তানদের দেখা করার আশায় ছিলেন। তিনি ভাবতেন, এক না একদিন অবশ্যয় তাদের ফিরে পারেন তিনি।
এইভাবে ১৩ বছর কেটে যায়। একটি শিশু অধিকার সংগঠন এক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ শিশুদের সম্পর্কে তথ্য পায়। এরপর তারা তথ্য সংগ্রহের পর জানতে পারেন, ২০১০ সালে জগদীশপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। এরপর তারা পুলিশের কাছ থেকে তাদের ঠিকানা পেয়ে তাদের বাড়িতে পৌঁছে যায়। নিতুর সঙ্গে কথা বলার পর তারা মঙ্গলবার একটি ভিডিয়ো কলের সাহায্যে রাখি এবং বাবলুর সঙ্গে তাকে কথা বলিয়ে দেয়। তাতে তারা একে অপরকে চিনতে পেরেছিলেন। নিতু জানান, তিনি যেন হারানো পৃথিবী ফিরে পেয়েছেন।
এরপর দেখা হলে নিতু তার সন্তানদের বুকে জড়িয়ে ধরেন। আবেগঘন সেই মুহূর্তে কেউ চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।রাখির দিদিমা শকুন্তলা বলেন, ‘আমি ১৩ বছর পর আবার যেন জীবনে ফিরে পেলাম।’রাখি বলেছেন, যে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে, তিনি এবং বাবলু মিরাট এবং গাজিয়াবাদের সংশোধনাগারে থাকতেন। যেখানে তারা শিক্ষা অর্জন করেছিলেন। দুজনেই বাড়িতে ফিরে আসতে পেরে খুশি।