মোদী সরকারের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় বাজেট পছন্দ হল না শেয়ার বাজার। এদিন ৯৮৭ পয়েন্ট পড়ে বন্ধ হয়েছে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ। অন্যদিকে ৩১৪ পয়েন্ট পড়েছে নিফটি। এটি বাজেটের দিনের ইতিহাসে অন্যতম বড় পতনের মধ্য একটি। তবে এই বড় পতন নিয়ে তেমন চিন্তিত নন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি জানান যে এদিন ছিল শনিবার। দুই তিন বাজারেরে প্রতিক্রিয়া দেখেই তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেটে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নেই বলেই মনে করছে বাজার। প্রায় সবকটা সেক্টরের সূচকও এদিন লোকসান করেছে। এদিন ২.৪৩ শতাংশ কমে ৩৯৭৩৫.৫৩ পয়েন্টে বন্ধ হয় বিএসই, যা প্রায় ২.৬৬ শতাংশ কম গতকালের থেকে। অন্যদিকে নিফটি পড়েছে ৩১৮.৩০ পয়েন্ট। এটি বন্ধ হয় ১১৬৪৩.৮০ পয়েন্টে ২.৬৬ শতাংশ পতনের পর। ইনফ্রা, মেটাল ও পিএসইউ ব্যাংকের সূচক সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতি ক্ষেত্র ৩-৪ শতাংশের পতন হয়েছে। আইটিসি, টাটা মোটর্স, এইচডিএফসি, এল অ্যান্ড টি প্রভৃতির শেয়ারের দাম বিএসইতে সবচেয়ে কমেছে শতাংশের হারে।
এদিন বিএসইতে মোট ৬১৬ শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৬৮৯ শেয়ারের দাম ও ১২০ শেয়ারের দামে কোনও পরিবর্তন হয়নি।
বাজার পতনের প্রাথমিক কারণ হিসাবে যেগুলি উঠে আসছে সেগুলি হল- ইনফ্রা প্রজেক্টে আরও বেশি সরকার জোর দেবে বলে মনে করছিল বাজার। এবছর পাঁচ শতাংশ হারে বাড়ছে জিডিপি। আগামী বছরে সরকারের টার্গেট দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি। কিন্তু তার জন্য যে সঞ্জীবনী দেওয়ার প্রস্তুত ছিল, তাহলে অনেক বেশি খরচা করতে হত। এতে ফিসক্যাল ঘাটতি অনেক বাড়ত। সেই দিকে যায়নি সরকার।
অন্যদিকে লং টার্ম ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স (এলটিসিজি) প্রত্যাহার বা না কমানোয় হতাশ মিউচুয়াল ফান্ডের সংস্থাগুলি। ডিভিডেন্ড ডিস্ট্রিবিউশন ট্যাক্স (ডিডিটি) প্রত্যাহার করা হলেও এবার থেকে বিনিয়োগকারীদের থেকে কর নেওয়া হবে। এতে ঘরোয়া বিনিয়োগকারীদের জন্য খারাপ বলে মনে করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে যে দ্বিমুখী করনীতি চালু করা হয়েছে, এতে সমস্যা করদাতাদের বাড়বে বলেও মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞরা। কোনটা ব্যবহার করলে বেশি কর বাঁচানো যাবে, এই নিয়ে থাকবে ধোঁয়াসা বলেও মনে করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে চাঙ্গা করার জন্য কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় হতাশ বাজার। বিলগ্নীকরণ থেকে আগামী বছর দুই লক্ষ কোটি টাকা রোজগার করার টার্গেট নিয়েছে কেন্দ্র। বর্তমান অর্থবর্ষে ১.০৫ লক্ষ কোটি টাকার টার্গেটই পুর্ণ হয়নি। তাই এই টার্গেট পূর্ণ হবে, এমন আশা কম অনেক বিশেষজ্ঞের। নির্মলা সীতারামন যদিও বলেছেন যে তারা নিজেদের হোমওয়ার্ক করেছেন ও এই টার্গেটে পৌঁছে যাবেন।