প্রয়াত হলেন ইংল্যান্ডের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তাঁর প্রয়ানের সঙ্গে সঙ্গেই গোটা পৃথিবী জুড়ে মানুষের মধ্যে মেরুকরণ এবং তার জেরে দু’ধরনের মন্তব্যে ভরে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। একদিকে যেমন বহু মানুষ এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন, অ্যদিকে একদল ইংল্যান্ডের রাজপরিবারের সাম্রাজ্যনীতি এবং ভবিষ্যতে সে বিষয়ে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের নিশ্চুপ থাকা নিয়েও সরব হয়েছেন। সব মিলিয়ে মৃত্যুর পরে শোক প্রকাশ ছাড়াও দ্বিতীয় এলিজাবেথ প্রসঙ্গে চোখা সমালোচনামূলক মন্তব্যেও ভরে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
কিন্তু এরই মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে একটি টুইট। যদিও সেই টুইটটি টুইটার কর্তৃপক্ষের তরফে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তার পরেও থেকে গিয়েছে তার রেশ। তা নিয়ে মন্তব্য জানাচ্ছেন বহু মানুষ।
কী ছিল এই টুইটে? Carnegie Mellon University-র এক অধ্যাপক এই টুইটটি করেন। উজু আনিয়া নামের সেই অধ্যাপক যা লিখেছিলেন, তার বাংলা করলে মোটামুটি দাঁড়ায়, ‘আমি শুনেছি চোর, ধর্ষক এবং গণহত্যাকারী সাম্রাজ্যের রানি শেষ পর্যন্ত মারা যাচ্ছেন। তাঁর মৃত্যু যেন খুব বেদনাদায়ক হয়।’ (I heard the chief monarch of a thieving and raping genocidal empire is finally dying. May her pain be excruciating)।
এই টুইট নিয়ে এমনই জলঘোলা হয় যে টুইটার কর্তৃপক্ষ দ্রুত এটি ডিলিট করে দেয়। এর পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফেও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট করে জানানো হয়, ‘যদিও স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের অধিকার সকলের আছে। কিন্তু উজু আনিয়ার মতামতের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামতের কোনও সম্পর্ক নেই।’
কিন্তু বিষয়টি এখানেই থামেনি। তাঁর এই মন্তব্যের সমর্থনে এগিয়ে আসেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই বক্তব্য, রানি কখনও তাঁর পরিবারের ভূমিকা এবং অত্যারের জন্য ক্ষমা চাননি। ফলে তাঁকেও ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ ভাবার কোনও কারণ নেই।
অবশ্য উজু আনিয়ার বিরোধিতাও করেছেন অনেকে। তালিকায় আছেন জেফ বেজোসের মতো ধনকুবের ব্যবসায়ীও। তিনি লেখেন, ‘এটা এমন কারও লেখা, যিনি পৃথিবীকে আরও সুন্দর করতে চান? আমার তো মনে হয় না।’
তবে এসবের পরেও উজু আনিয়াও থেমে যাননি। সোশ্যাল মিডিয়াতেই তিনি এর পরে লেখেন, ‘কেউ যদি মনে করেন, আমি এই সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছাড়া আর কিছু দেখাবো, তাহলে ভুল করেছেন। আমার অর্ধেক পরিবার ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, এই সাম্রাজ্যবাদীদের মদতপুষ্ট গণহত্যায়। বাকিরা আজও সেই ভয়ানক অবস্থা থেকে বেরোতে পারেনি।’
সব মিলিয়ে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।