বহু দিন ধরে দক্ষিণ কোরিয়ায় দশক পুরনো কুুকুরের মাংস খাওয়ার রীতি প্রচলিত ছিল। কুকুরের মাংস সেদেশে খাওয়ার রীতি এবার আইন বিরুদ্ধ হিসাবে বিবেচিত হতে চলেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার শাসকদল পিপলস পাওয়ার পার্টি জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষের দিকে, সেদেশে কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করার পথে তারা পদক্ষেপ করছে।
উল্লেখ্য়, দক্ষিণ কোরিয়ার এই দশক পুরনো প্রথা ক্রমেই দেশের যুব সমাজের অপছন্দের তালিকায় আসতে থাকে। সেদেশের যুব সমাজ এই নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। এছাড়াও আন্তর্জাতিক স্তরে পশুপ্রেমীরা এই খাদ্যাভাসের প্রতিবাদ জানায়। তারপরই সেদেশের শাসকদল এমন পদক্ষেপ নেয়। তবে এই নিষেধাজ্ঞা আপাতত তিন বছরের বাড়তি সময় নেবে কার্যকরী হতে। কারণ যে সমস্ত বিক্রেতারা এই কুকুরের মাংস বিক্রির প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদের বিকল্প ব্যবসার বন্দোবস্ত করার পথে হাঁটবে সরকার। তারপর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরী করার পদক্ষেপ করা হবে। এই সিদ্ধান্ত কোরিয়ার সাংস্কৃতিক দিকের সঙ্গে অনেক দিন ধরে যুক্ত। তবে একই সঙ্গে সেদেশের শাসক দলের এই সিদ্ধান্ত কোরিয়ার সমাজের পশুদের প্রতি মানবিক চেতনার দিক থেকে একটি বড় দিক। কোরিয়ার সমাজের এই কুকুরকে মেরে খাওয়ার রীতি বহু দিন ধরে আলোচিত হয়েছে। তবে এবার পরিবর্তনের ডাক দিয়েছে সেদেশের যুব সমাজ। সেদেশের পিপলস পাওয়ার পার্টির মুখপাত্র ইউ এয়াও ডং বলছেন, ‘কুকুরের মাংস খাওয়ার বিষয়ে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও বিতর্কের অবসান ঘটানোর জন্য একটি বিশেষ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এটি শেষ করার সময় এসেছে।’
এদিকে সেদেশের ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হি কুকুরের মাংস খাওয়ার একজন সোচ্চার সমালোচক এবং তাঁর স্বামী, রাষ্ট্রপতি ইউন সুক ইওল সহ অনেকেই সেখানে বিপথগামী কুকুর দত্তক নিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস খাওয়া বিরোধী অ্যান্টি- ডগ মিট বিল অতীতে ব্যর্থ হয়েছে কারণ শিল্পের সাথে জড়িতদের প্রতিবাদ এবং কৃষক ও রেস্তোরাঁ মালিকদের জীবিকা নিয়ে উদ্বেগের কারণ তৈরি হয়। কুকুরের মাংস খাওয়া কোরিয়ান উপদ্বীপে একটি প্রাচীন অভ্যাস এবং গ্রীষ্মের তাপকে হারানোর উপায় হিসাবে দেখা হয়। তবে ধীরে ধীরে দক্ষিণ কোরিয়ায় এর রীতি কমেছে। যদিও কিছুজনরা খান রোস্তোরাঁতে। কিছু বয়স্ক সেখানে এমন মাংস খান। তবে নির্দিষ্ট কিছু রেস্তোরাঁতেই তা পাওয়া যায়।