সিবিআইয়ের মতো দেশের প্রিমিয়ার তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে বিভিন্ন ছোটখাটো মামলার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। যে মামলাগুলি একেবারেই মামুলি। কিন্তু দেশের প্রিমিয়ার তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে শুধুমাত্র এমন মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া উচিত, যেগুলি দেশের সুরক্ষা বা দেশের বিরুদ্ধে হওয়া অর্থনৈতিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। এমনই মতপ্রকাশ করলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারপতি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লার উপস্থিতিতে সোমবার সিবিআইয়ের অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, 'দুর্নীতি-বিরোধী তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে সিবিআইয়ের যে মূল ভূমিকা আছে, সেই বৃত্তের বাইরে গিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বিভিন্ন রকমের ফৌজদারি মামলায় তদন্ত করতে বলা হচ্ছে। তার ফলে নিজের নীতি মেনে চলার ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের উপর প্রচুর দায়-দায়িত্ব বেড়ে যাচ্ছে।
মাত্র ৩০০ টাকার মতো ঘুষের ক্ষেত্রেও সিবিআই তদন্তের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সেই মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমার মতে, আমরা একই সময় আমাদের প্রিমিয়ার তদন্তকারী সংস্থাকে বিভিন্ন কাজে লিপ্ত করে দিচ্ছি। ওদের শুধুমাত্র এমন বিষয়ের উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত, যা জাতীয় সুরক্ষা এবং দেশের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।’ সেইসঙ্গে অফিসারদের 'ধার' করে বা ডেপুটেশনে যে সিবিআইকে কাজ চালাতে হচ্ছে, সেটাও উল্লেখ করেন ভারতের প্রধান বিচারপতি।
আরও পড়ুন:
তারইমধ্যে নয়া তিনটি ফৌজদারি আইনের ('ভারতীয় ন্যায় সংহিতা', ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য আইন’) প্রশংসা করেন ভারতের প্রধান বিচারপতি। যেগুলি আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। ব্রিটিশ আমলের ভারতীয় দণ্ডবিধি (ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বা আইপিসি), কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর (সিআরপিসি) এবং ১৮৫৭ সালের ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্টের পরিবর্তে সেই তিনটি নয়া আইন নিয়ে এসেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সেই তিনটি আইনের প্রশংসা করে সোমবার প্রধান বিচারপতি বলেন, 'এই আইনগুলি বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার বিভিন্ন বিষয়গুলির ক্ষেত্রে ডিজিটাল বিষয়টি যুক্ত করেছে। বিচারব্যবস্থার আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে যা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। নয়া আইনের আওতায় প্রাথমিকভাবে এফআইআর দায়ের করা থেকে চূড়ান্ত রায়দান করা পর্যন্ত ফৌজদারি মামলার তদন্তের প্রতিটি প্রক্রিয়ারই ডিজিটাল রেকর্ড রাখা হবে।' তাঁর মতে, ডিজিটাল প্রক্রিয়া চালু হওয়ার ফলে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। বিভিন্ন স্তরের হাতে তথ্য থাকবে। ফলে তদন্তকারী সংস্থা এবং আদালতের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি পাবে।