উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল অসম। পুলিশের সঙ্গে জবরদখলকারীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দু'জন জবরদখলকারীদের। আহত হয়েছেন ৯ পুলিশকর্মীও। অবশ্য মৃতরা বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী কিনা, তা এখনও জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দরং জেলার ঢলপুরের গরুখুঁটিতে। এদিন ওই এলাকার জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ করতে অভিযানে নামে পুলিশ। সেই সময় প্রায় ২ হাজারের মতো জবরদখলকারীরা প্রতিবাদ করলে, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে দু'জন প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশের অভিযোগ, তাদের কাজে বাধা দান করেছেন জবরদখলকারীরা। উচ্ছেদ অভিযানে নামলে, তাঁদের উপর ইট ছোঁড়া হয়। প্রচুর মানুষ তাদের ঘিরে ধরে। তারপর তাদের মারধর করা হয়। আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
দরংয়ের পুলিশ সুপার সুশান্ত বিশ্বাস শর্মা বলেন , ' প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ জবরদখলকারীরা আমাদের ঘিরে ধরেন। প্রথমদিকে কোনও ঝামেলা না হলেও, যখন জেসিবি দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়, তখনই ইটবৃষ্টি শুরু করে জবরদখলকারীরা । পুলিশকর্মীদের উপরে লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করা হয় ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দরংয়ের চর অঞ্চলে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বসবাস করছিলেন অনুপ্রবেশকারীরা। তবে মূলত ব্রহ্মপুত্রের এই অঞ্চল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা বসবাস করেন।
অভিযোগ উঠেছে, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে এখানে এসে বসবাস করছিলেন। সেখানে তাদের উচ্ছেদ করতে নামে পুলিশ। এরপরই দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় বসবাসকারী কৃষিজীবীদের অনুপ্রবেশকারী বলে দেগে দেওয়া হয়। তাঁদের আরও অভিযোগ, অধিকাংশ সময় বাংলাদেশ থেকে এই অঞ্চলে অবৈধভাবে বসবাস করছেন অনেকে। পরিচয় বিভ্রাটের কারণে রাজ্যের কৃষিজীবী বাসিন্দাদেরও পুলিশের অত্যাচার সহ্য করতে হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছিলেন, চর অঞ্চল বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে মুক্ত করতে অভিযান চালানো হবে। এর আগে সোমবারে ঢলপুরের দু'টি গ্রামে সরকারি 8৫০০ বিঘা জমির উপরে বসবাসকারী ৮০০ বাঙালি মুসলিম পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। তবে ওই দিন কোনও সংঘর্ষ না হলেও বৃহস্পতিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নয় গোটা এলাকা ।