যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে কোভিড মোকাবিলায় ভ্যাক্সিন উৎপাদনের উদ্দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নেতৃত্বাধীন কোভ্যাক্স প্রকল্পে যোগ দিল চিন। শুক্রবার এই ঘোষণা করেছে চিনের বিদেশ মন্ত্রক।
আমেরিকা ও রাশিয়ার অনুপস্থিতিতে প্রকল্পের আওতায় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে চিনের অন্তর্ভুক্তি নিঃসন্দেহে টিকা উৎপাদনের দৌড়ে গতি বৃদ্ধি করল। চিনে আপাতত তিনটি কোভিড ভ্যাক্সিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে রয়েছে। পরীক্ষা সফল হলে বিশ্বের উন্নয়নকামী দেশগুলির সুবিধায় আগামী দুই বছরে ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেজিং। পাশাপাশি WHO জানিয়েছে, ২০২১ সালের শেষে ২০০ কোটি ভ্যাক্সিনের ডোজ সরবরাহ করা যাবে।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক ভ্যাক্সিন জোট গ্যাভি-র সঙ্গে চুক্তি সই করে কোভ্যাক্স প্রকল্পে আনুষ্ঠানিক ভাবে শামিল হয়েছে চিন।আপাতত এই জোটের অন্তর্গত ৯টি ভ্যাক্সিন, যেগুলি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নানান পর্যায়ে রয়েছে।
গত মে মাসে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঘোষণা করেন, কোনও ভ্যাক্সিন তৈরি হলে তা বিশ্বজুড়ে সরবরাহ করবে তাঁর দেশ। সেই সঙ্গে অতিমারী মোকাবিলায় আগামী ২ বছরে ২০০ কোটি ডলার অনুদানেরও ঘোষণা করেছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, চিনে বর্তমানে ১১টি ভ্যাক্সিন ট্রায়ালের নানান পর্যায়ে রয়েছে। তার মধ্যেচারটি তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে। টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে চিনা সংস্থাগুলি মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করছে বলে গত সেপ্টেম্বর মাসে জানিয়েছেন চিনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের শীর্ষ স্থানীয় আধিকারিক উ্য ইউয়ানবিন।
২০২১ সালের শেষে চিনের Covid-19 ভ্যাক্সিন উৎপাদনের হার ১০০ কোটি ডোজ ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর চলতি বছরের শেষে মোট উৎপাদিত ভ্যাক্সিন ডোজের সংখ্যা দাঁড়াবে ৬.১ কোটি।
তৈরি হয়ে গেলে কী ভাবে সারা বিশ্বে ভ্যাক্সিন সরবরাহ করা হবে, তার এক খসড়া পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। বলা হয়েছে, ‘প্রথম দফায় প্রথম সারির কোভিড হাই রিস্ক গ্রুপের সদস্য যেমন স্বাস্থ্যকর্মী, জাহাজবন্দর কর্মীদের কাছে ভ্যাক্সিন পৌঁছে দেওয়া হবে। দ্বিতীয় দফায় টিকা দেওয়া হবে বর্ষীয়ান ও শিশু নাগরিকদের। তৃতীয় পর্বে সাধারণের জন্য টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হবে। এই পদ্ধতি মেনেই ভ্যাক্সিন সরবরাহ করা হবে।’