বুধবার সন্ধ্যায় নয়, মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় ‘নিভার’। যা মামল্লপুরম এবং কারাইকালের মধ্যে দিয়ে তামিলনাড়ু এবং পুুদুচেরিতে আছড়ে পড়বে। গতি কিছুটা কমলেও ‘নিভার’ স্থলভূমিতে প্রবেশের সময় ঘণ্টায় ১৩০-১৪৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে। ঘূর্ণায়মান বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে।
সাম্প্রতিক বুলেটিন অনুযায়ী, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোসাগরে চেন্নাইয়ের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ২৫০ কিলোমিটার দূরে ‘নিভার’ অবস্থান করছে। তারইমধ্যে মামল্লপুরমের ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। গত দু'দিন ধরে চেন্নাই-সহ একাধিক জেলায় বৃষ্টি হচ্ছে। তামিলনাড়ুর থানজাভুর, তিরুভারুরু, নাগাপট্টিনাম, আরিয়ালুর, পেরামবালুর, ভিল্লুপুরমের মতো জেলা এবং পুদুচেরি ও কারাইকালে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। তাছাড়াও ভেলোর, রানিপেট, কৃষ্ণাপল্লি, তিরুচিরাপল্লি, সালেমের মতো জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। চেন্নাইয়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কায় চেম্বাবারামবাক্কাম জলাধার থেকে আদইয়ার নদীতে জল ছাড়া হয়েছে। প্রাথমিক ১,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। পরিস্থিতির বিচার করে আরও জল ছাড়া হতে পারে।
চেন্নাইয়ের আঞ্চলিক আবহওয়া অধিকর্তা এস বালাচন্দ্রন জানিয়েছেন, পুদুচেরি, মালিয়াদুদুরাই, কারাইকাল, ভিল্লুপুরম এবং চেঙ্গালপেটে ঝড়ের গতিবেগ সবথেকে বেশি থাকবে। চেন্নাই এবং পার্শ্ববর্তী জেলায় ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। ঘূর্ণায়মান বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে।
মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে ‘নিভার’। প্রবল বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ঘরবাড়ি (মূলত টিনের বাড়ি ও কুঁড়েঘর) ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কলা এবং শস্যখেতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে। পুদুচেরি ও কারাইকালে সবথেকে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে তামিলনাড়ু, পুদুচেরি এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। ঘূর্ণিঝড়ে যাতে সর্বনিম্ন প্রাণহানি হয়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ, টেলিকম পরিষেবা ফিরিয়ে আনার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) একাধিক দল, ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে। তামিলনাড়ুর ১৩ টি জেলা থেকে এখনও পর্যন্ত ৩,৯৪৮ জন শিশু-সহ ২৪,১৬৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের ৩১৫ টি ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে। পুদুচেরিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ভারতীয় সেনার সাউর্দান কমান্ডের তরফে জানানো হয়েছে, সরকার এবং প্রশাসনকে সাহায্যের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে উদ্ধারকারী দল, ইঞ্জিনিয়ারদের দল।