শীতলক্ষ্যা নদীতে জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনায় তল্লাশি অভিযানে আরও দু'জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ এর ফলে নারায়ণগঞ্জের এ ঘটনায় মোট ১০ জনের মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল৷
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ শাহ সিমেন্ট এলাকা থেকে আনুমানিক ৩০ বছর বয়সি একজন পুরুষ এবং হরিহপুর এলাকা থেকে ৩/৪ বছর বয়সি এক শিশুর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আরেফিন এ তথ্য জানান৷ উদ্ধার করা মোট ১০ জনের দেহের মধ্যে সাত জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশ৷
নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ থানার ওসি মনিরুজ্জামান সোমবার রাত পর্যন্ত মোট চারজন নিখোঁজ থাকার তথ্য জানিয়েছিলেন৷ তাঁরা হলেন, মুন্সিগঞ্জ গজারিয়ার জয় রামের সাড়ে তিন বছর বয়সি মেয়ে আরোহী, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ বিষ কাঠালি এলাকার আবদুল্লাহ আল জাবের (৩২), মুন্সীগঞ্জ জোবায়ের হোসেন এবং ৫৫ বছর বয়সি কুয়েত প্রবাসী মোসলেম উদ্দিন হাতেম৷ মঙ্গলবার সকালে দু'জনের দেহ পাওয়ার পর স্বজনদের খবর দেওয়া হয়৷ মরদেহ দুটি শনাক্ত হলে নিখোঁজের তালিকায় আরও দু'জনের নাম থাকবে বলে জানান ওসি মনিরুজ্জামান৷
আগের দু'দিনে উদ্ধার হওয়া মুন্সিগঞ্জ সদরের উত্তর ইসলামপুরের ব্যবসায়ী জয়নাল ভূঁইয়া (৫৫), মুন্সিগঞ্জ সদরের আরিফা আক্তার (৩৫), তার ছেলে সাফায়েত (১৫ মাস), পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের সালমা বেগম (৪০), তার মেয়ে ফাতেমা (৭), মুন্সিগঞ্জ সদরের স্মৃতি (২০), উম্মে খায়রুন ফাতেমা (৪০) এই সাতজনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে৷ তবে সোমবার উদ্ধার হওয়া আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সি একজন পুরুষের মরদেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি৷ মঙ্গলবারও নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের ডুবুরিরা জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আরেফিন৷
রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদরের সৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন মালবাহী জাহাজ রূপসী-৯ পেছন থেকে চাপা দিলে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসার উদ্দিন ডুবে যায়৷ নৌপুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জগামী লঞ্চে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিলেন৷ যাত্রীদের অনেকে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও বেশ কয়েকজন থাকেন নিখোঁজ৷
উদ্ধার কাজে অংশ নেন ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ কর্মীরা৷ সোমবার ভোরে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ ৫৫ হাত জলের নীচ থেকে লঞ্চটিকে টেনে তীরে তোলে৷ রবিবারই মুন্সিগঞ্জের হোসেনদি এলাকা থেকে রূপসী-৯ জাহাজ এবং এর মাস্টারকে আটক করে নৌ-পুলিশ৷
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-পরিচালক বাবুলাল বৈদ্য নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সোমবার৷ মামলায় রূপসী-৯ জাহাজের মাস্টার রমজান আলি শেখ, নুরুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম, নাদিম হোসেন, লস্কর সুমন হোসেন, ইয়াসিন, সুকানি জাহিদুল ইসলাম ও গ্রিজার রিয়াদ হোসেন-সহ মোট আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ৷
(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)