শুক্রবার দিল্লিতে প্রতিবাদ অবস্থানে থাকা হরিয়ানা ও পঞ্জাবের কৃষকদের সমর্থন জানালেন মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের কৃষকরা। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাঁরা রাজধানীর বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
মহারাষ্ট্র ও অন্ধ্র প্রদেশে গতকাল রাজ্যজুড়ে কৃষকরা কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হন। উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও মধ্য প্রদেশ থেকে দলে দলে কৃষকরা দিল্লির উদ্দেশে মিছিল শুরু করার পরে শনিবার দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমান্তে একাধিক সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তের সোনিপত ও ঝাজ্জরে কয়েক ঘণ্টা জুড়ে কৃষকদের মিছিল রুখতে জল কামান ছুড়ে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়েও বিক্ষুব্ধদের রুখতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। শেষে বিকেলে বাধ্য হয়েই হরিয়ানা-পঞ্জাবের কৃষকদের দিল্লি প্রবেশের অনুমোদন দেওয়া হয়। আপাতত তাঁরা উত্তর দিল্লি শহরতলির বুরারিতে নিরংকারী সমাগম মাঠে অবস্থান করছেন।
গতকাল উত্তর প্রদেশের কমপক্ষে ১২টি জেলায় কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন কৃষকরা। তার জেরে রাজ্যের প্রধান সড়কগুলিতে যান চলাচল ব্যাহত হয়। শনিবার দিল্লির উদ্দেশে ট্র্যাক্টর-সহ প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন কৃষক সংগঠনের নেতারা।
একই দিনে পঞ্জাব ও হরিয়ানার প্রতিবাদী কৃষকদের বিক্ষোভে যোগ দিতে দিল্লি প্রবেশের পথে পুলিশের বাধা পেলে আগ্রায় তিন নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন মধ্য প্রদেশের বিক্ষুব্ধ কৃষকরা।
দিল্লির বিক্ষোভ অবস্থানে যোগ দেওয়ার জন্য রাজস্থানের শ্রী গঙ্গানগর, হনুমানগড় ও শিকার জেলার কৃষকদের উদ্দেশে আবেদন জানিয়েছে অখিল ভারত কিষাণ সভার সদস্যরা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আমরা রাম বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দিল্ল চলো আন্দোলনে যোগ দেবেন রাজস্থানের কৃষকরা। শুক্রবার রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে আমরা সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিবাদ প্রদর্শন করেছি।’
উত্তরাখণ্ডের উধম সিং নগর থেকে আসা দিল্লিমুখী প্রতিবাদী কৃষক মিছিল উত্তর প্রদেশের রামপুরে আটকে দেয় পুলিশ। তার জেরে রামপুরের জাতীয় সড়কের উপরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিক্ষোভ অবস্থান শুরুকরেন কৃষকরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় কৃষকরা। ফলে জাতীয় সড়কে দীর্ঘ সময় ধরে যান চলাচল থেমে থাকে।
মহারাষ্ট্রের ঠানে, আহমেদনগর, নাশিক, সাংলি ও ওয়ার্ধায় কেন্দ্র-বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হন কৃষকরা। দিল্লির বিক্ষোভ মঞ্চে তাঁরা শামিল হবেন কি না, তা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন অখিল ভারত কিষাণ সভার সভাপতি অশোক ধাওয়ালে। তার আগে আগামী ৪-৫ দিন ধরে ধরনায় বসতে চলেছেন মহারাষ্ট্রের কৃষিজীবীরা।
কৃষক বিক্ষোভের আঁচ থেকে রেহাই পায়নি অন্ধ্র প্রদেশও। গতকাল বিজয়ওয়াড়া শহরে অখিল ভারত কিষাণ সংঘর্ষ কোঅর্ডিনেশন কমিটি এক বিক্ষোভ সভার আয়োজন করলে তাতে কয়েক হাজার কৃষক যোগ দেন। বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ বাধে। বেশ কয়েক জন প্রতিবাদীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।