ডাল-তুলোর মতো বেশ কিছু ফসলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রদান করা হয় না। তবে দেশের স্বার্থে সেই সব ফসল ফলানোর জন্যে কৃষকদের উৎসাহিত করতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সঙ্গে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, সেই সব ক্ষেত্রে ৫ বছরের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করা হবে। তবে আন্দোলনকারী কৃষকরা কেন্দ্রীয় সরকারের এহেন প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করল। পাশাপাশি কৃষকরা জানিয়ে দেন, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি তারা দিল্লির উদ্দেশে ফের যাত্রা শুরু করবে।
উল্লেখ্য, রবিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার এবং কৃষকদের চতুর্থ দফার বৈঠক। সেই বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বলেন, বৈঠকে কৃষক নেতারা জলস্তর নেমে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই আবহে মন্ত্রী শস্য বৈচিত্র্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন। পীযূষ গোয়েল কেন্দ্রের নয়া প্রস্তাবের বিষয়ে বলেন, 'ধরুন গম ছেড়ে কৃষকরা যদি ডালের চাষ করেন। তাহলে ভারতকে কম পরিমাণ ডাল আমদানি করতে হবে। দেশের মানুষের চাহিদা মিটবে। জলস্তরের সমস্যা মিটবে।' এদিকে কৃষকদের আশঙ্কা, ডাল বা তুলোর মতো শস্য ফলনে তাঁদের লোকসানে পড়তে হতে পারে। কারণ এই ফসলগুলির ক্ষেত্রে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেয় না সরকার। তাই তারা এই বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান। এই আবহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রস্তাব দেন, NCCF, NAFED-এর মতো সমবায় সমিতিগুলি পাঁচবছরের জন্য কৃষকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবে এবং শস্য বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে কাজ করবে। সেই সময় এই শস্যগুলির ন্যনতম সহায়ক মূল্যে কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করবে এই সমবায়গুলি। তুলোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
এদিকে রবিবার মধ্যরাতের বৈঠকের পরে কিষাণ মজদুর মোর্চার আহ্বায়ক সরবন সিং পন্ধের এবং সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা জগজিৎ সিং দল্লেওয়াল দাবি করেন, কেন্দ্রের এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। তাও তারা নিজেদের সমর্থকদের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করার জন্য সময় চেয়ে নিয়েছেন। সোমবারের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন বলে দাবি করেছিলেন কৃষক নেতারা। সেই মতো সোমবার কেন্দ্রের সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয় আন্দোলনকারীরা। এদিকে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, এর মধ্যে সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসার আর কোনও পূর্ব পরিকল্পনা তাদের নেই। তবে আলোচনার ক্ষেত্রে তাদের কোনও আপত্তি নেই।
এই বিষয়ে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা জগজিৎ সিং দল্লেওয়াল সোমবার বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে পাম তেল আমদানিতে। এই পরিমাণ অর্থ যদি তারা কৃষকদের চাষের জন্য তৈলবীজের জন্য বরাদ্দ করে তাহলে, এটা তাদের উপকৃত করবে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এখন যে (শস্য বৈচিত্র্য নিয়ে) প্রস্তাব দিয়েছে, তা শুধু সেই কৃষকদেরই উপকৃত করবে যারা ধান ধানচাষের মরশুমের মাঝে ডালের চাষ করতে পারবেন।