বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি বহুতলে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণ গেল অন্তত ৪৩ জনের। জানা গিয়েছে, যে বহুতলে আগুন লাগে, সেটি একটি কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স ছিল। ভবনের দ্বিতলে একটি রোস্তোরাঁ থেকে এই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি। কী ভাবে আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে দমকল বিভাগের আধিকারিক মহম্মদ মইনুদ্দিন জানান, শুরুতে নীচের দু'টি তলায় আগুন লাগে। পরে তা ওপরের দিকে ছড়াতে থাকে। এর জেরে অনেকেই আটকে পড়েন। জানা গিয়েছে, যে ভবনটিতে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে সেটি ঢাকার বেইলি রোডে অবস্থিত। স্থানীয় সময়, রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর থেকে জোর কদমে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। পরে গভীর রাতে কিছুক্ষণের জন্য উদ্ধারকাজ বন্ধ হয়েছিল। আজ সকালে ফের উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শুনে ময়দানে নামেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ঘটনা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ সামন্ত লাল সেন জানান, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হলে ৩৩ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন সেখানকার চিকিৎসকরা। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ১০ জনের দেহ উদ্ধার করেছিলেন দমকলকর্মীরা। এছাড়াও সামন্তবাবু আশঙ্কা প্রকাশ করেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত স্থানীয় সময় ৯টা ৫০ মিনিট নাগাদ শপিং মলের দু'তলায় অবস্থিত এক রেস্তোরাঁয় প্রথম আগুন লাগে। এরপর দ্রুত সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে থাকে শপিং মলে। সেই শপিং মলে একাধিক জামাকাপড়ের দোকান ছিল। সঙ্গে আরও রেস্তোরাঁও ছিল। সেগুলিতে আগুন লেগে যায়। রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের জেরে আরও দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। বহু মানুষজন আটকে পড়েন সেখানে। দমকলকে খবর দেওয়া হলে দ্রুত সেখানে পৌঁছে যান অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা। জানা যায়, ঘটনাস্থলে দমকলের ১৩টি ইঞ্জিন পাঠানো হয়। দীর্ঘক্ষণের প্রচেষ্টায় ৭৫ জনকে শপিং মল থেকে উদ্ধার করেন দমকল কর্মীরা। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশেরই জ্ঞান ছিল না। পরে উদ্ধার হওয়া মানুষজনের মধ্যে থেকে ৪৩ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এছাড়া বাকি আরও প্রায় ৩০ জনের মতো অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
প্রসঙ্গত, অতীতেও একাধিকবার বাংলাদেশের বহুতল বা কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই সব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এর আগে ২০২১ সালে এক কারখানায় আগুন লেগে ৫২ জনে রমৃত্যু হয়েছিল। তার আগে ২০১৯ সালে ঢাকার একটি বহুতলে আগুন লাগায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৭ জন। সেই বছর অপর এক অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন মারা গিয়েছিলেন।