আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার আরও খর্ব করল তালিবান সরকার। সেখানে মহিলাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা আগেই বন্ধ করা হয়েছে। স্কুলেও পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে একাধিক শর্ত আরোপ করেছিল। তারপর একে-একে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় মহিলাদের কাজ করা বন্ধ করেছে। তাছাড়া মেয়েদের বিউটি পার্লারে কাজ করাও নিষিদ্ধ করেছে। এর আগে শুধুমাত্র ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের পড়ায় ছাড় দিয়েছিল তালিবান। আর এবার আরও একধাপ এগিয়ে আফগানিস্তানে তালিবান সরকার ফতোয়া জারি করেছে, ১০ বছরের বেশি বয়সি কোনও ছাত্রী স্কুলে যেতে পারবে না। বেশ কিছু অঞ্চলে তৃতীয় শ্রেণির ওপরে মেয়েদের বাড়ি পাঠাতে বলেছে তালিবান সরকার। গজনি প্রদেশের তালিবান শাসিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্কুলের প্রধানদের এবং স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে এই মর্মে নির্দেশিকা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: তালিবান শাসনকে কি স্বীকৃতি দেয় ভারত? আরও একবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল দেশ
বিবিসি ফার্সির তরফে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, মেয়েরা তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে পারবে। এই মর্মে বেশ কিছু অঞ্চলে প্রচার ও নির্দেশনা মন্ত্রকের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। মেয়েদের স্কুলের প্রধানদের অনুরোধ করা হয়েছে, তৃতীয় শ্রেণির ওপরে যে সমস্ত মেয়েরা পড়ছে, তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হবে। পূর্ব আফগানিস্তানের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী বিবিসিকে জানায় , ‘আমাদের বলা হয়েছিল যে লম্বা এবং ১০ বছরের বেশি বয়সি মেয়েরা স্কুলে প্রবেশ করতে পারবে না।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে তালিবান কর্মকর্তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মহিলাদের উপর নিষেধাজ্ঞার জারি করেছিল। এর তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছিল গোটা বিশ্ব। তালিবান সরকারের তরফে জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে এই আদেশ কার্যকর করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের আগস্টে তালিবান সরকার আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নারীদের উপর বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা অব্যহত রয়েছে। দেশের নারীদের পার্ক, জিম, মেলা, সেলুনে যেতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং তাঁদের অবশ্যই পর্দার আড়ালে থাকতে হবে বলে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেককে সরকারি চাকরি থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকী দেশটিতে মহিলাদের নেতৃত্বে রাখা যাবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তালিবান সরকার। তাছাড়া, কোনও পুরুষ সঙ্গী না থাকলে কাজ করার পাশাপাশি ভ্রমণের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দেশটির নাগরিকদের একাংশের মতে, সরকারের উচিত এর জন্য একটি কাঠামো তৈরি করা। কাঠামোটি এমন হওয়া উচিত যাতে ইসলাম বা দেশের কোনও ক্ষতি না হয়।