একের পর এক জিএসটি প্রতারণার পর্দাফাঁস। গত মাসে নয়ডা পুলিশ এই জিএসটি প্রতারণার জেরে তিনজনকে গ্রেফতার করে। সব মিলিয়ে ২৪৬টি সেল কোম্পানির খোঁজ পেয়েছেন জিএসটি আধিকারিকরা। প্রায় ৫৫৭ কোটি টাকার প্রতারণা করা হয়েছে বলে খবর। অর্থমন্ত্রক এনিয়ে বিবৃতি জারি করেছে। এই সেল কোম্পানিগুলিকে সামনে রেখে জিএসটি প্রতারণা করা হত। এমনকী গরিব মানুষের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে আধার কার্ড সংগ্রহ করে নানা কারচুপিও করা হত বলে অভিযোগ।
এদিকে মন্ত্রকের হিসেব বলছে, ২০১৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত জিএসটি প্রতারণার ৫০৭০টি কেস এসেছিল। তার মধ্য়ে বাংলায় ২০৭টি, কেরলে ১৩৫টি, তেলেঙ্গানায় ১৩৭, মহারাষ্ট্রে ৭৬৫, রাজস্থানে ৪০১ ও উত্তরপ্রদেশে ১৯৩টি মামলা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, নয়ডা পুলিশের সূত্র ধরে ও গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ২টি বড় সিন্ডিকেটের খোঁজ মিলেছে। সেই একটি সিন্ডিকেটে রয়েছে আনন্দ কুমার ও অপর সিন্ডিকেটে রয়েছেন অজয় কুমার। এরাই ভুয়ো সেল কোম্পানি খুলে প্রতারণা করছিল বলে অভিযোগ।
মিন্টের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, একাধিক ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে লেজার, ইন ভয়েস, ই-ওয়ে বিল গুলি পাওয়া গিয়েছে। হোয়াটস অ্য়াপ চ্যাট, ভয়েস মেসেজের একাধিক নমুনা মিলেছে। তার মাধ্যমে বোঝা গিয়েছে, ভুয়ো জিএসটি বিল তৈরি করা হত। আর তার মাধ্য়েমে কোটি কোটি টাকার লেনদেন করা হত।
আর এই সব লেনদেনের জন্য একাধিক ভুয়ো কোম্পানি তৈরি করা হয়েছিল। মানে যে কোম্পানির বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই। কিন্তু জিএসটির বিল কাটার জন্য সেই কোম্পানির নাম ব্যবহার করা হচ্ছিল। গোটাটাই একটা চক্র। সেই চক্র সক্রিয় হয়েছিল নয়ডায়। সেই ভুয়ো কোম্পানির স্ট্যাম্প, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, চেক বুক, আধার কার্ড, প্যান কার্ড মিরাট পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।
মন্ত্রকের তরফে দেখা গিয়েছে, এই চক্রের চাঁইদের সঙ্গে ব্রোকার বা এজেন্টদের যোগাযোগ ছিল। ব্রোকার বা এজেন্টদের মাধ্যমে গরিব মানুষদের নানা ধরনের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা হত। টাকার বিনিময়ে এই ধরনের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা হত। মনে করা হচ্ছে এই চক্রের পেছনে ব্যাঙ্কের আধিকারিকরাও যুক্ত থাকতে পারেন। কারণ যেভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে তার সঙ্গে ব্যাঙ্কের লোকজনের যুক্ত থাকাটাই স্বাভাবিক।
অর্থমন্ত্রক দেখেছে বেশিরভাগ বেনিফিসিয়ারি দিল্লির বাসিন্দারা। অন্যান্যরা সব মিলিয়ে দেশের ২৬টি রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে। এই দুটি সিন্ডিকেটের মাধ্য়মে ২৪৫টি ভুয়ো কোম্পানি খোলা হয়েছিল। তার মাধ্যমেই প্রতারণার জাল বোনা হচ্ছিল।