ঘটনা ১৭ মার্চের। তবে তার রেশ এখনও জারি রয়েছে বিহারের বক্সারের গিরধর বারানউ গ্রামে। গ্রামের পথে পথে, চায়ের দোকানে এখন শুধুই সোনার মুদ্রার উদ্ধারের ঘটনা আলোচনা চলছে। আলু চাষের জমিতে উদ্ধার হয় সেই সোনার মুদ্রা। তাও যে সে সোনার মুদ্রা নয়। গুপ্তযুদের সোনার মুদ্রা মাটি খুঁড়তেই সেদিন বেরিয়ে এসেছিল স্থানীয় গণেশ শাহের পরিবারের সদস্যের হাতে।
বক্সারের আর চার পাঁচটা গ্রামের মতোই গিরধর বারানউ গ্রামটি। সেখানে বাকি দিনের মতোই ১৭ মার্চও চলছিল আলু চাষ। গণেশ শাহের পরিবারের জমিতে চলছিল এই আলু চাষ। আচমকা সেখানে, আলুর ক্ষেতে মাটি খুঁড়ে আলু বের করতে গিয়ে এক কৃষক উদ্ধর করেন ৩ টি সোনার মুদ্রা। সোনার মুদ্রা উদ্ধার হতেই গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে থাকে খবর। মুহূর্তে ছুটে আসে স্থানীয় সোনেবরাসা পুলিশ স্টেশনের পুলিশ। ১৮৭৮ সালের ভারতীয় ট্রেজার ট্রোভ আইনের আওতায় পুলিশ এই সোনার মুদ্রা হস্তান্তরিত করে দুমরাওঁ এলাকার এসডিওর কাছে। আর তাঁর কাছে মুদ্রা হস্তান্তরিত হতেই দেখা যায়, এই স্বর্ণমুদ্রা যে সে মুদ্রা নয়। ওই মুদ্রা গুপ্ত যুগের মুদ্রা। রাজ্যের আর্কিওলজি বিভাগের এক কর্তা বলেন, 'ঘটনাটি জানাজানি হতেই, আমরা বিষয়টি দেখতে বিশেষজ্ঞদের একটি দল পাঠাই। রবিবার বক্সার পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের তরফে কয়েনগুলি হস্তান্তর করা হয়েছে। এটি এখন বক্সারের সীতারাম মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।'
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপাতত মনে করা হচ্ছে এই সোনার মুদ্রাগুলি গুপ্তযুগের। তবে এই মুদ্রাগুলির পরীক্ষা হওয়া জরুরি। এসডিও কুমার পঙ্কজ বলছেন, মুদ্রা উদ্ধারের ৫ দিনের মাথায় তা রাজ্যের আর্কিওলজি দফতরের কাছে জানানো হয়েছে। জেলায় ভারতরত্ন বিসমিল্লা খানের স্মৃতির উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য গোটা বিষয়টি একটু বিলম্ব হয় বলে জানিয়েছেন এসডিও। এদিকে, ইতিহাসবিদ রাজেশ্বর প্রসাদ বলছেন, বক্সারে এককালে ঋষি বিশ্বামিত্রের একটি আশ্রম ছিল। তা পরিদর্শনে প্রায়ই আসতেন শ্রীরামচন্দ্র ও লক্ষ্মণ। ইতিহাসবিদ বলছেন, এই সোনার মুদ্রার উদ্ধার জানান দিচ্ছে যে বক্সার আর্কিওলজির দিক থেকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।