এক মা সন্তানের জীবনে অন্য সকল ব্যক্তির স্থান দখল করতে পারে, কিন্তু মায়ের স্থান দখল করতে পারে না কেউ। এই বাক্যটি সর্বজনবিদিত এবং স্বতঃসিদ্ধ। সন্তান প্রসব করার পর থেকে শুরু করে নিজের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত এক মা, শুধু নিজের সন্তানের জন্য বেঁচে থাকেন। সন্তানকে প্রথম অন্ন খাওয়ানো, তার প্রথম বায়না শোনা, আবার তার হৃদয় ভাঙার কাহিনি শুনে তাঁকে সঠিক পথ দেখানো, অবিরাম সমর্থন জুগিয়ে যাওয়া, সন্তান কাঁদলে মাথা রাখার জন্য কাঁধ বাড়িয়ে দেওয়া— এ সবই এক মা করে থাকেন অবিরাম, অবিরত। মায়ের জীবনে কোনও ছুটি হয় না, হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পরও তাঁরা পান না কোনও বেতন, উপরন্তু কৃতজ্ঞতাটুকু কেউ স্বীকার করেন না। তা সত্ত্বেও সন্তানের জন্য মায়ের ভালোবাসায় খামতি থাকে না কোনও। সন্তান যতই বড় হয়ে যাক না-কেন, মায়ের কাছে তাঁরা থাকে সেই ছোট্ট সোনাটি।
তাই মাতৃ দিবস পালনের মধ্যে দিয়ে আমরা সেই অসাধারণ, আশ্চর্যজনক, নিঃস্বার্থ, ব্যক্তিটিকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই যাঁরা আমাদের যত্নে রেখেছে, এমনকি সারাজীবন ধরে আমাদের লালনপালন করে গেছে।
প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার ভারতে মাতৃ দিবস পালিত হয়। চলতি বছর ৯ মে মাতৃদিবস।
ইতিহাস
১৯০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম মাতৃ দিবস পালিত হয়। নিজের মা, অ্যান রিসে জারভিসের স্মৃতির উদ্দেশে অ্যানা জারভিস নামক এক মহিলা মাতৃ দিবসকে স্বীকৃত ছুটি হিসেবে পালনের পক্ষে কথা বলেন। অ্যান রিসে জারভিস ছিলেন এক শান্তি কর্মী ও তিন বছর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। পশ্চিম ভার্জিনিয়ার সেন্ট অ্যান্ড্রুস মেথডিস্ট চার্চে নিজের মায়ের একটি মেমোরিয়াল রাখেন অ্যানা। বর্তমানে এটি আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস শ্রাইন। অ্যানা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন যে, মা-ই এমন একজন যিনি নিজের সন্তানের জন্য ‘পৃথিবীর অন্য কোনও ব্যক্তির তুলনায় অনেক বেশি করে থাকেন।’
মাতৃ দিবসের তারিখ
ভারতে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মাতৃ দিবস পালিত হলেও, বিশ্বের নানান দেশে নানান দিনে এটি পালিত হয়ে আসছে। ইউকে-তে মার্চের চতুর্থ রবিবার এটি পালিত হয়। আবার গ্রিকরা ২ ফেব্রুয়ারি এই দিবস পালন করে।
সেলিব্রেশন
এ দিনে বাচ্চারা নিজের মায়ের জন্য উপহার কিনে থাকেন। আবার পার্টি দেন বা মায়ের প্রতি নিজের ভালোবাসা, সম্মান ও প্রশংসা ব্যক্ত করার জন্য বিশেষ কিছু করে থাকেন। এই বিশেষ দিনে মায়েদের সমস্ত গৃহকর্ম থেকে ছুটি দেওয়া হয় এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সেই দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে লকডাউনের কারণে মায়েদের কাজের চাপ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলেও, অন্তত একদিনের জন্য নিজের মা-কে রানীর মতো রাখা যেতেই পারে।