বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই হিংসার আগুনে জ্বলছে হরিয়ানার বেশ কিছু জায়গা। হিংসা ছড়িয়েছে গুরুগ্রামেও। আর এই হিংসার নেপথ্যে থাকা আসল কারণ 'মনু মানেসার'কে নিয়ে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি সরকার। এই মনুকে কেন্দ্র করেই এই গোটা হিংসার সূত্রপাত। প্রসঙ্গত, এই মনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে ভিওয়ানির দুই মুসলিম যুবককে খুনের নেপথ্যে রয়েছে। সে আবার বজরং দলেরও সদস্য। এই আবহে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর এবং সেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল বীজ জানিয়েছেন, আইন আইনের পথে চলবে। অভিযুক্ত বজরং দল সদস্যের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, হরিয়ানার বজরং দল কর্মী মনু মানেসারকে কেন্দ্র করেই সেখানের নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায় হিংসা ছড়ায় সম্প্রতি। অভিযোগ, বজরং দলের সেই কর্মী একটি আপত্তিকর ভিডিয়ো পোস্ট করেছিল সোশ্য়াল মিডিয়ায়। তারপর থেকেই এনিয়ে শোরগোল ছড়িয়েছিল। ওই ব্যক্তি এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলাও রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সেই মিছিল থেকে হিংসার সূত্রপাত, সেই মিছিলে মনুর থাকার কথা ছিল। মিছিলে থাকার বিষয়ে মনু নিজেই নাকি একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তারই সেই মিছিল আটকানো হয়। মূলত এই বজরং দল কর্মীর জেরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। চলে গুলিও। মৃত্যু হয় দুই হোমগার্ডের। হিংসায় এখনও পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৬। এই গোটা ঘটনা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আকার ধারণ করে।
দাবি করা হয়েছে, এই মনু মানেসারের বিরুদ্ধে ভিওয়ানিতে দুই মুসলিম ব্যক্তিকে খুন করার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারির সেই ঘটনায় মনু এবং আরও ২০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। অভিযোগ, দুই মুসলিম যুবককে অপহরণ করে খুন করা হয়েছিল। একটি পুড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি সেই দুই মুসলিম যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এদিকে সেই মামলায় পুলিশ এখনও মনুকে ধরতে পারেনি। সে এখনও পলাতক। তবে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে যেখানে মনু নিজে দাবি করে যে সে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রায় সামিল থাকবে। এই আবহে গুরুগ্রাম আলওয়ার হাইওয়েতে এই যাত্রা থামান কয়েকজন। এরপরই মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি গাড়িকে লক্ষ্য পাথর ছোঁড়া হয়। সেই সময় পাশের এক শিবমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫০০ মানুষ। সন্ধ্যার দিকে গুরুগ্রাম সোহনা হাইওয়েতে হিংসা ছড়াতে থাকে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বেশ কিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মস্থানেও হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইট বৃষ্টি। এরপর বিগয় কয়েকদিনও বিক্ষিপ্ত ভাবে হিংসা ঘটেছে বিভিন্ন জায়গায়।