রাজ্যসভার নির্বাচনে হিমাচলপ্রদেশের একটি আসন থেকে হেরে গিয়েছে কংগ্রেস। আর এরই সঙ্গে সেই রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়েই জল্পনা তৈরি হয়ে গেল। আর আজ সকালে হিমাচলের বিজেপি বিধায়করা গিয়ে দেখা করেন সেখানকার রাজ্যপাল শিবপ্রতাপ শুক্লার সঙ্গে। তাঁরা আস্থা ভোটের দাবি জানান কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে। বিজেপির দাবি, এর আগে বাজেট পেশের সময়ই হিমাচল বিধানসভায় আস্থা ভোটের দাবি জানিয়েছিল বিজেপি। তবে সেই সময় সেই দাবি খারিজ হয়ে যায়। তবে রাজ্যসভায় কংগ্রেস বিধায়করা বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ায় পরিস্থিতি বদলেছে। এই আবহে হিমাচলে কংগ্রেসের সরকার ফেলতে উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপি। এই সবের মাঝেই হিমাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা বীরভদ্র সিংয়ের ছেলে বিক্রমাদিত্য সিং মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন আজ সকালে। এই আবহে সরকার বাঁচাতে মরিয়া কংগ্রেস। (আরও পড়ুন: হিমাচলে রাজ্যসভার ভোটে হয় 'টাই', তারপরে BJP-র কাছে কীভাবে হারল কংগ্রেস?)
আরও পড়ুন: কংগ্রেস ছাড়লেন কৌস্তভ বাগচী, 'বিকল্প রাজনীতির' পথিক এবার কোন পথে?
এদিকে বিজেপির 'আশঙ্কা', কংগ্রেসের স্পিকার বিধানসভা থেকে বিজেপির কয়েকজন বিধায়ককে সাসপেন্ড করতে পারেন। এরই সঙ্গে কংগ্রেসের ক্রস ভোট দেওয়া বিধায়কদেরও তিনি সাসপেন্ড করতে পারেন। তবে গেরুয়া শিবিরের দাবি, রাজ্যসভার নির্বাচনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে কংগ্রেস সরকারে থাকার অধিকার হারিয়েছে। এদিকে হিমাচলে সুখবিন্দর সিং সুখুর সরকার বাঁচাতে শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। জানা গিয়েছে, ভূপিন্দার সিং হুড্ডা এবং ডিকে শিবকুমারকে সেখানের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল হিমাচলপ্রদেশে রাজ্যসভার একমাত্র আসনের নির্বাচনে টানটান উত্তেজনা দেখা যায়। উল্লেখ্য, ৬৮ আসন বিশিষ্ট হিমাচল বিধানসভায় সরকার পক্ষে আছেন ৪৩ জন বিধায়ক। এর মধ্যে কংগ্রেস বিধায়ক ৪০ জন, এবং নির্দল বিধায়ক ৩ জন। অপরদিকে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা হল ২৫। এই আবহে রাজ্যসভার একমাত্র আসনে কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত ছিল অঙ্কের নিরিখে। তবে ক্রস ভোটিংয়ে হিমাচলের থেকে 'নিশ্চিত' রাজ্যসভা আসনটি হাতছাড়া হয় কংগ্রেসের। দাবি করা হচ্ছে, শাসক গোষ্ঠীর ৯ জন বিধায় বিজেপির প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। হিমাচল বিধানসভার 'ম্যাজিক ফিগার' হল ৩৫। এই আবহে দেখা যাচ্ছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ৩৪ ভোট পড়েছে রাজ্যসভা নির্বাচনে। এই আবহে বিজেপি যদি 'অপারেশন কমল'-এর মাধ্যমে আরও এক বিধায়ককে দলে টানতে পারে, তাহলে সুখুর সরকার পড়ে যেতে পারে। তবে আক্ষরিক অর্থে এই কাজটা অতটাও সহজ নয়। কারণ সেই ক্ষেত্রে ৭ কংগ্রেস বিধায়ককে বহিষ্কার করা হতে পারে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য। আর তা না হয়ে যদি বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়করা পদত্যাগও করেন, তাহলেও আরও কয়েকজনকে নিজেদের দিকে টানতে হবে বিজেপিকে। তবে বিগত বছরগুলিতে একর পর এক রাজ্যে এই একই ঘটনা ঘটেছে। তাতে বিজেপি হিমাচলেও এমনটা করতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।