প্রবল বৃষ্টি, হড়পা বান ও ধসে ভারতের তিন রাজ্যে কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমনই জানানো হয়েছে সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে। ওই সংবাদসংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত তিনদিনে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং ওড়িশায় মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের কী অবস্থা?
প্রবল বৃষ্টিতে হড়পা বান এবং ধসে বিপর্যস্ত হিমাচলের একাংশ। শনিবার বৃষ্টি সংক্রান্ত ঘটনায় হিমাচলে মোট ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে মান্ডি, কাংড়া এবং চাম্বা জেলা থেকে। মান্ডিতে হড়পা বানের জেরে যে পাঁচজনের নিখোঁজ হয়ে যান, তাঁদের এখনও খোঁজ মেলেনি। মান্ডি-সহ একাধিক জায়গায় অবরুদ্ধ হয়ে আছে রাস্তা। পরিষ্কারের পর শিমলা-চণ্ডীগড় হাইওয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে।
তারইমধ্যে পঞ্জাব-হিমাচলে সীমান্তে যে রেল সেতু ভেঙে পড়েছিল, সেই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। ১৯২৮ সালে ব্রিটিশ আমলে চাক্কি নদীর উপর সেই সেতু তৈরি করা হয়েছিল। যা শনিবার ভেঙে পড়েছে। সেইসঙ্গে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির জন্য রাজ্য বিপর্যয় তহবিল থেকে ২৩২.৩১ কোটি টাকা ছাড়া হয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের কী অবস্থা?
শনিবার মেঘভাঙা বৃষ্টিতে দেরাদুন, তেহরি এবং পাউরি জেলায় কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সেতু ভেঙে, নদীর ধ্বংসলীলায় অনেকে খোঁজ মিলছে না। তেহরি জেলার গাউদ গ্রামে এখনও পাঁচজন নিখোঁজ। দেরাদুনে নিখোঁজের সংখ্যা সাত। তারইমধ্যে গাদেরা জঙ্গলে আটকে পড়া ২৪ জন পর্যটককে উজদ্ধার করা হয়েছে।
ওড়িশার কী অবস্থা?
এমনিতেই প্রবল বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়েছিল। এবার ঝাড়খণ্ডের গালুডি ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে সুবর্ণরেখা অববাহিকা এলাকায় ভয়ঙ্কর বন্যার সতর্কতা জারি করল ওড়িশা। যা ২০০৮ সালের বন্যার থেকেও মারাত্মক হতে পারে।
ওড়িশার বিশেষ ত্রাণ কমিশনার প্রদীপ জেনা জানিয়েছেন, সুবর্ণরেখা ওড়িশায় প্রবেশের ঠিক আগে গালুডি ব্যারেজ দিয়ে ছয় লাখ কিউসেক জল যাচ্ছে। তার জেরে সুবর্ণরেখার অববাহিকা অঞ্চলে মারাত্মক বন্যার সম্ভাবনা আছে। প্লাবিত হতে পারে বালাসোর জেলার বালিয়াপাল, ভোগরাই, জলেশ্বর ও বাস্তা ব্লক এবং ময়ূরভঞ্জ জেলার একাংশ। বুড়িবালাম নদীর ফুঁসতে থাকায় ইতিমধ্যে বালাসোর টাউনের ফুলাড়ি, চন্দমারিপাড়িয়া, কাঁটাবানিয়া এবং পাসিমিলার মতো নিচু এলাকা জলের তলায় চলে গিয়েছে।
জেনার আশঙ্কা, ‘২০০৮ সালের থেকেও এবারের বন্যার প্রভাব বেশি ভয়ঙ্কর হতে পারে।পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ তিনি জানান, যে এলাকাগুলি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে, সেখান থেকে ইতিমধ্যে মানুষকে সরানোর কাজ চলছে। মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) মোতায়েন করা হয়েছে।