ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট আহমেদাবাদ (IIMA) দ্বারা পরিচালিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, অন্যান্য জেলার পরিবারগুলির তুলনায় ভারতের কোভিড-১৯ প্রভাবিত জেলার পরিবারগুলি তাদের সোনার সঞ্চয় বাড়িয়েছে। ‘মহামারী চলাকালীন পরিবারের সঞ্চয়ে সোনার গুরুত্ব: উদীয়মান অর্থনীতির প্রমাণ' নামক শিরোনামের আইআইএমএ দ্বারা প্রকাশিত পেপারে বলা হচ্ছে, সোনার সঞ্চয়ে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে অন্যান্য আর্থিক সম্পদ এবং নগদ থেকে দূরে সরে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩০ জুন আইআইএমএ-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই সমীক্ষায় দুটি প্রধান সূচক ব্যবহার করে সংকটের তীব্রতার তারতম্য ধরা হয়েছে। প্রতি ১০০০ জনসংখ্যার কোভিড -19 কেস এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রাপ্ত রাতের আলোর তীব্রতা। সমীক্ষাটি ২১টি রাজ্যের `১৪২টি জেলাকে কভার করেছে। ভারত বিশ্বে সোনার দ্বিতীয় বৃহত্তম ভোক্তা (অলঙ্কার আকারে)। এর পাশাপাশি সাধারণত গড় হিসেবে ভারতীয় পরিবারগুলি মূল্যবান ধাত ক্রয়ে মোট সম্পদের ১১ শতাংশ বিনিয়োগ করে, উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাপত্রে।
‘আমরা প্রমাণ পেয়েছি যে কোভিড -১৯ ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলিতে প্রতি ১,০০০ জনসংখ্যার কোভিড-১৯ কেস পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে শীর্ষ-একতৃতীয়াংশ কোভিড প্রভাবিত জেলার পরিবারগুলি অন্যান্য জেলার পরিবারের তুলনায় সোনার দিকে ঝুঁকছে।’ কাগজটিতে একথাই উল্লেখ করা হয়েছে৷
সমীক্ষা অনুসারে, কোভিড আক্রান্ত জেলাগুলিতে পরিবারের সঞ্চযয়ের ক্ষেত্রে সোনার অংশ অন্যান্য জেলার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে প্রায় সাত শতাংশ বেশি। এই জেলাগুলিতে দেখা যাচ্ছে কোভিড অতিমারীর আগে সোনার সঞ্চয় অনেকখানি কম, এবং কোভিড অতিমারীর সময়ে সঞ্চয়ের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি।
সমীক্ষায় দেখা গেছে যে মহামারীর সময় রাত্রিকালীন আলোর তীব্রতা যে সকল জেলায় কম দেখা গিয়েছে, সেই জেলাগুলিতে বেশি পরিমাণে সোনা সঞ্চয়ের প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। এই জেলাগুলিই অর্থনৈতিক ভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
বালগোপাল গোপালকৃষ্ণান এবং সংকেত মহাপাত্র (আইআইএমএ ফ্যাকাল্টি সদস্য) এবং ঐন্দ্রিলা চ্যাটার্জি (আইআইএমএ-তে ইন্ডিয়া গোল্ড পলিসি সেন্টারের সাথে যুক্ত) দ্বারা লেখা গবেষণাপত্র অনুসারে, অর্থনৈতিক ভাবে সংকটে থাকা জেলাগুলিতে সোনার সঞ্চয়ের হার ২.৯ শতাংশ বেশি। উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামোযুক্ত জেলাগুলির পরিবারগুলি সোনার দিকে কিছুটা পরিমাণ ঝুঁকেছে, এমনই দেখা গিয়েছে সমীক্ষাতে। বিশেষজ্ঞরা পর্যবেক্ষণ করে বলেন, যেসকল জেলায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভালো, সেখানে সোনা সঞ্চয়ের হারও কম, কারণ নিরাপত্তাহীনতার সাথে সোনা সঞ্চয়ের একটি সরল সম্পর্ক আছে।