শান্তিনিকেতনের পরে, এবার কর্ণাটকের বেলুর, হালেবিদ এবং সোমনাথপুরার মন্দিরগুলির ‘হোয়সালা গ্রুপ’ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হল। ইউনাইটেড নেশনসের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) সোমবার এ কথা জানিয়েছে। সৌদি আরবের রিয়াধে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪৫তম অধিবেশনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়টি নিয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একটি টুইট করেছেন সোমবার রাতে। তিনি লেখেন, এটা ভারতের জন্য আরও গর্বের বিষয়। হয়সালার মন্দির UNESCO বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হোয়সালা মন্দিরগুলির সৌন্দর্য ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের অসাধারণ কারুকার্যের প্রমাণ।
হোয়সালা মন্দিরগুলির ইতিহাস: হোয়সালা মন্দিরগুলি দ্বাদশ-ত্রেয়োদশ শতকে নির্মিত হয়েছিল। শিল্প এবং সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হিসাবে বিবেচিত হোয়সালা রাজবংশের রাজধানী ছিল এটি। তিনটি হোয়সালা মন্দির ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (ASI) এর অধীনে সুরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ হিসাবে রয়েছে। এএসআই এটি সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করে।
(আরও পড়ুন: ‘বিশ্ব হেরিটেজ’-র তকমা পেল রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতন! দুনিয়ায় উজ্বল বাউলের দেশ)
শান্তিনিকেতনও এর আগে ইউনেস্কো হেরিটেজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হল: এর আগের দিনই বাংলার শান্তিনিকেতনকে এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক শতাব্দী আগে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে, শান্তিনিকেতন অবশেষে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তিনি আনন্দিত এবং গর্বিত।
প্রধানমন্ত্রী মোদিও বলেছেন, সমস্ত ভারতীয়দের জন্য গর্বের মুহূর্ত এটি। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্নের প্রতীক শান্তিনিকেতন এবং ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ইউনেস্কোর হেরিটেজের তালিকায় স্থান পেয়েছে বলে তিনি আনন্দিত।
শান্তিনিকেতন, হোয়সালা মন্দির বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পাওয়ায় জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন অমিত শাহও। কর্ণাটকের হোয়সালা মন্দিরকে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করায় দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান তিনি। তিনি বলেন, এগুলি ভারতীয় সংস্কৃতির চিরন্তন জীবন্ত প্রমাণ।
শাহ এক্স-এর একটি পোস্টে বলেছেন, শান্তিনিকেতন গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাসভবন, মানুষের সম্ভাবনার অসীম বিকাশের প্রচার করে। একই সঙ্গে, হয়সালা মন্দির আমাদের কারুশিল্পের শীর্ষস্থানের বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, এটা দেশের জন্য আনন্দের উপলক্ষ যে আমাদের দু’টি সাংস্কৃতিক স্থান ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
কর্ণাটকের সোমনাথপুরার চেন্নাকেসাভ ১২৬৮ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় নরসিংহের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছিল এই হয়সালা মন্দির। কর্ণাটকের হাসান জেলার বেলুড়ে কেশব মন্দিরটি বিষ্ণুবর্ধন দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। এই মন্দিরগুলির শৈলী সম্পূর্ণরূপে দ্রাবিড় বা সম্পূর্ণ নাগারা নয়। এটি নির্মাণ করা হয়েছে অনন্য শৈলীতে। কেশব মন্দিরের দেয়ালে খোদাই করা আছে দেবতা, দেবী ও সঙ্গীতশিল্পীদের অবয়ব।