সোমবার থেকে দেশ জুড়ে কার্যকর হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)। তারপরে অসমজুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিক্ষোভ। সিএএ-র প্রতিলিপি পোড়ানো হয়েছে। এছাড়াও অসমের ১৬ টি বিরোধী দলের জোট ইউনাইটেড অপজিশন ফোরাম (ইউওপিএফ) আজ মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে হরতাল এবং প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। এই অবস্থায় আন্দোলনকারীদের পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার। সংগঠনগুলিকে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নোটিশ জারি করেছে গুয়াহাটি পুলিশ। সেক্ষেত্রে নির্দেশ অমান্য হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ ‘নিঃশর্ত নাগরিকত্ব না হলে…’, সিএএ নিয়ে মোদীদের তোপ দেগে হুঁশিয়ারি মমতাবালার
আন্দোলনকারী দলগুলিকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে গুয়াহাটি পুলিশ জানিয়েছে, হরতালের কারণে রেল এবং জাতীয় সড়কের সম্পত্তি সহ সরকারি বেসরকারি সম্পত্তির কোনও ক্ষতি হলে বা কোনও নাগরিক আহত হলে আইনের উপযুক্ত ধারার অধীনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি হলে খরচ আদায় করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৯ সালে সিএএ-র প্রতিবাদে অসমে তুমুল বিক্ষোভ হয়েছিল। তাতে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আর সোমবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হতেই ৩০টি আদিবাসী অরাজনৈতিক সংগঠন সিএএ-র প্রতিলিপি পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখায়। গুয়াহাটি, কামরূপ, বারপেটা, লখিমপুর, নলবাড়ি, ডিব্রুগড়, গোলাঘাট এবং তেজপুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন অংশে প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করে।
অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (এএএসইউ) প্রধান উপদেষ্টা সমুজ্জল ভট্টাচার্য হিন্দুস্থান টাইমসকে বলেন, ‘আমরা কোনওভাবেই সিএএ মেনে নেব না। অসমের জনগণের জন্য ক্ষতিকর এই আইনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ, অহিংস ও গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।’ আগামী দিনে প্রতিবাদ আরও তীব্র হবে বলে তিনি জানান।
সংগঠনের তরফে এর প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অসমজুড়ে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী দিনে অন্যান্য বিভিন্ন ধরণের প্রতিবাদ হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, তারা ইতিমধ্যে সিএএ-র বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করার জন্য আবেদন করেছেন। এদিকে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা হুঁশিয়ারি দেন, যে রাজনৈতিক দলগুলি যদি আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে ধর্মঘটের ডাক দেয় তবে তারা সমস্যায় পড়তে পরে। এছাড়া, আসাম জাতীয় পরিষদও এদিন রাজ্যের বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভ করেছে। পাশাপাশি, আম আদমি পার্টি (আপ) গুয়াহাটিতে রাজ্য সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে।
এদিকে, বিজেপির মুখপাত্র রূপম গোস্বামী সিএএকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিরোধীরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অন্যদিকে, এআইইউডিএফ বিধায়ক আশরাফুল হুসেন জানান, বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের আগে সিএএ প্রয়োগ করেছে কারণ তারা হিন্দু ভোট পেতে চাইছে।