কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সম্প্রতি একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা পেশ করেছিল রেল। আর সেই প্রস্তাবনার ইংরেজি নথিতে 'ইন্ডিয়া'র বদলে ছিল 'ভারত'। সম্ভবত এই প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কোনও ইংরেজি নথিতে দেশের নাম 'ভারত' বলে উল্লেখ করা হল। সূত্রের খবর, ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক সরকারি নথিতে ইন্ডিয়ার বদলে স্থান পাবে 'ভারত'। এই আবহে গেরুয়া শিবিরের যুক্তি, সংবিধানে বলা হয়েছে যে 'ইন্ডিয়া এবং ভারত একই'। তাই মন্ত্রিসভায় পেশ করা প্রস্তাবনার ইংরেজি নথিতে 'ভারত' থাকায় কোনও গলদ নেই বলেই দাবি সরকার পক্ষের।
প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই দেশের নাম নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে। বিরোধীদের জোটের নামকরণের পর থেকেই ইন্ডিয়া বনাম ভারত বিতর্ক শুরু হয়। এরই মাঝে এবার স্কুলের পাঠ্যবই থেকে 'ইন্ডিয়া' মুছে ফেলে তর জায়গায় 'ভারত' যুক্ত করার সুপারিশ দেয় ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটি। তা নিয়ে চর্চা চলতে চলতেই এখন কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রকের নথিতে ইন্ডিয়ার ছুটি হয়ে গেল।
উল্লেখ্য, ইংরেজিতে দেশের নাম ভারত নাকি ইন্ডিয়া, তা নিয়ে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই জোর চর্চা তর্ক, বিতর্ক চলছে দেশ জুড়ে। প্রসঙ্গত, বিজেপি বিরোধী দলের বৃহত্তর জোটের নাম - ইন্ডিয়া। এরপরই জাতীয় রাজনীতিতে 'ইন্ডিয়া বনাম ভারত' বিতর্ক শুরু হয়। এই আবহে জি২০ সম্মেলনেও 'ইন্ডিয়া'র স্থান নেয় 'ভারত'। আর আজ বিরোধীদের আক্রমণ শানাতে গিয়ে একবারও 'ইন্ডিয়া' বললেন না মোদী। এর আগে জি২০-র মঞ্চে 'ইন্ডিয়া' মুছে দিয়ে 'ভারত'-কে ঠাঁই দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগেই জন্ম নিয়েছে বিজেপি বিরোধী দলের বৃহত্তর জোটের। সেই জোটের নাম হয়েছে 'ইন্ডিয়া'। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধীরা ইতিমধ্যেই তিনটি বৈঠকও করেছেন দেশের বিভিন্ন শহরে। এই জোটকে কটাক্ষ করতে শুরু থেকেই ময়দানে নেমেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এই জোটকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে মোদী 'ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন'-এর নাম উল্লেখ করেছিলেন। এই আবহে বিরোধী জোটের নামকরণের জেরেই দেশের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ মমতা, কেজরি, রাহুলদের।
উল্লেখ্য, বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'-র পুরো নাম হল - ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স। আর বিরোধী জোটের নামকরণের পর থেকেই দেশের নাম নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এই আবহে 'ইন্ডিয়া' শব্দের বদলে ইংরেজিতেও 'ভারত' লেখা শুরু করে সরকার। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর তরফ থেকে যে আমন্ত্রণ পত্র বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে, তাতে 'প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া'র বদলে লেখা 'প্রেসিডেন্ট অফ ভারত'। সেই থেকেই দেশের নাম বদলের জল্পনা শুরু হয়। পরে সরকারি নথিতে মোদীর নামের পাশে লেখা হয় 'প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত'। উল্লেখ্য, হিন্দি বা বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় এমনিতেই 'ভারত' শব্দের উল্লেখ থাকে সরকারি ভাবে। তবে ইংরেজিতে এত বছর ধরে 'ইন্ডিয়া' ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে 'ইন্ডিয়া' নামটিকে 'ঔপেনিবেশিক' বলে আখ্যা দেয় গেরুয়া শিবির। এই আবহে এবারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পেশ করা সরকারি নথিতে 'ইন্ডিয়া'র বদলে 'ভারত' লেখা হল। এবং সম্ভবত ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও নিদর্শন দেখা যাবে।