জম্মুতে অবৈধভাবে বসবাসকারী রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশিদের আশ্রয় দেওয়া এবং সাহায্য করার অভিযোগে বড়সড় অভিযান চালাল পুলিশ। মঙ্গলবার দিনভর অভিযান চালিয়ে এখনও পর্যন্ত ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যার মধ্যে ৭ দম্পত্তি রয়েছে। জম্মু, রাজোরি, পুঞ্চ, ডোডা, কিশতওয়ার এবং রামবান জেলাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের অবৈধভাবে আশ্রয়দানকারীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। এই অভিযানে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে জাল প্যান কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ব্যাঙ্কের নথি এবং রেশন কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে নারাজ! বন্দরে ভিড়তেই ফেরাল ইন্দোনেশিয়রা! জানাল কারণ
জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে পঞ্চায়েত সদস্য এবং সাইবার ক্যাফে অপারেটর রয়েছে। এর জাল নথি তৈরিতে সাহায্য করেছিল। শুধু জম্মুতেই ৩৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, জম্মু, ত্রিকুটানগর, সাতোয়ারি, চাননি হিম্মত, নওয়াবাদ, ডোমানা এবং নাগরোটার প্রভৃতি থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৪০ টি জায়গায় অভিযান চালানো হয়। যারা আশ্রয় দিয়েছে তাদের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয়েও তল্লাশি চালানো হয়েছে। অভিযানে রোহিঙ্গা ও বাড়ির মালিকদের মধ্যে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত হিসাব, পাসবই, ভাড়া চুক্তি, আধার কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ফোন, রোহিঙ্গাদের দেওয়া সিম কার্ড, করের রেকর্ড, জল ও বিদ্যুৎ বিল সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুঞ্চ জেলায় জাল আধার কার্ড তৈরির সঙ্গেও একজন পঞ্চায়েত সদস্যের জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোহিঙ্গাদের জাল আধার ও রেশন কার্ড তৈরির অভিযোগে সেখানে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, একটি রোহিঙ্গা পরিবার ২০১৩ সাল থেকে মেনধারের ধরগলুন গ্রামে বসবাস করছে। সেই পরিবারের এক ছেলের সঙ্গে স্থানীয় এক মেয়ের বিয়ে হয়েছিল ২০১৬ সালে। সেক্ষেত্রে তার শ্বশুর তার নামে একটি জাল আধার কার্ড তৈরি করে এবং পরে রেশন কার্ড তৈরি করে। এই ঘটনার সঙ্গে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে গুরসাই থানায় মামলা হয়েছে।
কিশতওয়ারে ৬ রোহিঙ্গা ও ৭ সাহায্যকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেখানকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিল আহমেদ পোসওয়াল জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশের এডিজি আনন্দ জৈন জানিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থে দিনব্যাপী জম্মুতে অভিযান চালিয়ে ১২টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। যারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এটি জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরের আর্থ-সামাজিক কাঠামোরও ক্ষতি করতে পারে। তারা অবশ্যই সম্পদ ব্যবহার করছে।