বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > ক্যানসার হয়নি, ক্যানসার চিকিৎসা করে দেন! সুদ-সহ ৪.৫ লাখ টাকা ফাইন ডাক্তারদের

ক্যানসার হয়নি, ক্যানসার চিকিৎসা করে দেন! সুদ-সহ ৪.৫ লাখ টাকা ফাইন ডাক্তারদের

অভিজ্ঞ চিকিৎসকের ভুল! ক্যান্সারের কেমো দেওয়া হয় সুস্থ ব্যক্তিকে (HT)

উপভোক্তা কমিশনের তত্ত্বাবধানে কমিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখে, রেডিওথেরাপি বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসক শুধু রক্ত ​​পরীক্ষা, আল্ট্রাসাউন্ড ও বুকের এক্স-রে করান। রোগীর ক্যান্সার আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য অন্য কোনও পরীক্ষা করা হয়নি।

লখিমপুর খেরির কনজিউমার কোর্ট কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির রেডিওথেরাপি বিভাগের একজন অধ্যাপককে মোটা অঙ্কের জরিমানা করল। বার্ষিক সাত শতাংশ সুদ-সহ ৪.৫০ লক্ষ টাকা এবং অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। কী অপরাধ এই চিকিৎসকের? অভিযোগ ভুল চিকিৎসার। যেমন তেমন ভুল নয়। ক্যানসার আক্রান্ত নন, এমন একজন মহিলার ক্যানসারের চিকিৎসা করেন। শুক্রবার বিকেলে লখিমপুর খেরি জেলা উপভোক্তা কমিশনের চেয়ারপার্সন শিব মীনা শুক্লার বেঞ্চ এবং দুই সদস্য অলোক কুমার শর্মা এবং জুহি কুদ্দুসির বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

মামলাটি করেছিলেন লখিমপুর খেরির রানি গুপ্তা নামে ভুক্তভোগী ওই মহিলা। ২০০৭ সালের নভেম্বরে জেলার একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে তাঁর বাম স্তনে লাম্প অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। নার্সিংহোম থেকে ছাড়ার পরে লখনউয়ের ইন্দ্র নগরের সার্জন কেজিএমইউয়ের সিনিয়র ডাক্তারকে দেখিয়ে নিতে বলেন। কারণ একটি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টে ‘বর্ডার লাইন ম্যালিগন্যান্ট ফিলোডস টিউমার’- এর কথা উল্লেখ করা ছিল।

এর আগে ২০০৪ সালেও ভুক্তভোগী তাঁর বাম স্তনে একটি লাম্প অপসারণ করতে অস্ত্রোপচারের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু, অস্ত্রোপচারের পরে শুধুমাত্র একটি ফিলোডস টিউমার পাওয়া গিয়েছিল। তখন ম্যালিগন্যান্সির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এরপর ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে রানি কেজিএমইউতে ওপিডিতে তাঁর মেডিক্যাল রিপোর্টগুলি দেখান। যেখানে সিনিয়র ডাক্তার তথা, রেডিওথেরাপি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রক্ত ​​পরীক্ষা, এক্স-রে এবং আল্ট্রাসাউন্ড করার পরে রানি কেমোথেরাপি নেওয়ার পরামর্শ দেন। ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ জানুয়ারি কেমোথেরাপি দেওয়া হয় রানিকে৷ এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে কেমোথেরাপি চালিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল৷

এদিকে, কেমোথেরাপির কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় ভুক্তভোগী মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতালের পরামর্শের জন্য যান। সিনিয়র ডাক্তারদের কাছ থেকে তাঁর স্লাইড এবং ব্লক (বায়োপসি) বিষয়ে অন্য মতামত নেন। এই হাসপাতালের ডাক্তাররা নিশ্চিত করেন, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ এবং তাঁর ক্যানসারের কোনও লক্ষণ নেই। এরপর ভুক্তভোগী রানি উপভোক্তা কমিশনে যান।

উপভোক্তা কমিশনের তত্ত্বাবধানে কমিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখে, রেডিওথেরাপি বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসক শুধু রক্ত ​​পরীক্ষা, আল্ট্রাসাউন্ড ও বুকের এক্স-রে করান। রোগীর ক্যানসার আছে কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য অন্য কোনও পরীক্ষা করা হয়নি। কমিটির পরামর্শ, বিশেষজ্ঞ প্যাথলজিস্ট দ্বারা স্লাইড এবং ব্লকগুলি পর্যালোচনা করাই সর্বোত্তম পদ্ধতি।

কমিটির অনুসন্ধানের ভিত্তিতে সিনিয়র ওই চিকিৎসককে এক মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে উপভোক্তা কমিশন। কেজিএমইউ-এর মুখপাত্র সুধীর সিং বলেছেন, ‘কেজিএমইউ-এর সকল ফ্যাকাল্টিরাই আইন মেনে চলেন। আমরা উপভোক্তা কমিশনের আদেশের কপি পাইনি। অর্ডার কপি দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বন্ধ করুন