খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের ঘটনার ভিডিয়ো সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছিল কানাডার এক খবরের চ্যানেলে। এই নিয়ে ফের তরজা শুরু হয় তাই। এই খলিস্তানি জঙ্গি খুনের পর থেকেই ভারত এবং কানাডার মধ্যে সম্পর্কে তিক্ততা দেখা দিয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তাঁর দেশের ঘরোয়া রাজনীতির স্বার্থে এই ইস্যুকে কাজে লাগাতে চাইছেন। এই আবহে সেখানকার শিখ ভোটব্যাঙ্ককে হাতে রাখতে বারবার ভারতের দিকে আঙুল তুলছেন তিনি। এদিকে 'ফাইভ আই' গোয়েন্দা গোষ্ঠীর সদস্য কানাডা। সেই গোষ্ঠীতে আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডও আছে। এই আবহে এবার নিজ্জরকাণ্ডে কানাডার পেশ করা 'প্রমাণ' নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করল বন্ধুরাষ্ট্র নিউজিল্যান্ডই। (আরও পড়ুন: চিনে তিয়েনানমেন স্কোয়ারের কিছু দূরেই বিস্ফোরণ, অনেকের হতাহত হওয়ার আশঙ্কা)
আরও পড়ুন: ডিএ চমক রাজ্যের, ১২৪ কোটি ব্যয়ে সরকারি কর্মীদের খুশি করার চেষ্টা মুখ্যমন্ত্রীর
রিপোর্ট অনুযায়ী, নিউজিল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী উইনস্টন পিটারস কানাডার পেশ করা প্রমাণের প্রেক্ষিতে নিজ্জর খুনের সঙ্গে ভারত যোগ থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যার জেরে বন্ধুরাষ্ট্রের কাছে কার্যত মুখ পুড়ল কানাডার। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পিটারস এই নিয়ে বলেন, 'দেখুন, এই ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। আগের সরকার বিষয়টি দেখছিল। তবে ফাই আই গোষ্ঠীর থেকে যে তথ্য সামনে আসছে, তা শুধু আপনি শুনছেন। আপনি তা দেখতে পাচ্ছেন না। তাই সেই দাবি বা তথ্যের মান নিয়ে আপনার স্পষ্ট ধারণা থাকা সম্ভব নয়। আমি নিজে একজন আইনজীবী হয়ে বলছি, মামলা আছে। তবে প্রমাণ কোথায়? প্রমাণ কিন্তু নেই।'
আরও পড়ুন: দেশজুড়ে কার্যকর হয়েছে CAA, মমতা কি পারেন বাংলায় নাগরিকত্ব আইন আটকাতে?
উল্লেখ্য, কানাডায় নিজ্জর খুনের পর ভারত-কানাডার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। দুই দেশই একে অপরের কূটনীতিকদের বরখাস্ত করেছিল। পরে দিল্লির চাপে ভারত থেকে নিজেদের ৪১ জন কূটনীতিককে সরিয়ে নিয়েছিল কনাডা। ভারতের তরফ থেকে কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি ফের স্বাভাবিক হচ্ছে। এরই মাঝে ফের নিজ্জর হত্যার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। রিপোর্ট অনুযায়ী, কানাডা ভিত্তিক খবরের চ্যানেল সিবিসি নিজ্জর খুনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে। ভিডিয়োতে দেখা যায়, দু'টি গাড়ি করে এসে ৬ জন হামলা চালায় নিজ্জরের ওপরে। সেই হামলা দেশে বেশ পরিকল্পিত লাগছিল। ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, নিজ্জর গুরুদ্বারের পার্কিং লট থেকে গাড়ি নিয়ে বেরোচ্ছিল। সেই সময় একটি সাদা সিডান গাড়ি তার পথ আটকায়। এরপর দু'জন বন্দুকবাজ তাকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি করতে থাকে। পরে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের জুন মাসে গুরুদ্বারের ভেতরেই গুলি করে হত্যা করা হয় খলিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরকে। হরদীপকে ২০ বারেরও বেশি গুলি করা হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের পঞ্জাবি অধ্যুষিত সারে অঞ্চলে থাকত হরদীপ। বিগত কয়েকবছরে কানাডার ভ্যানকুবারে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে খলিস্তানি বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিল এই হরদীপ। কানাডায় মৃত হরদীপের বিরুদ্ধে এনআইএ-র চারটি মামলা ছিল। এক হিন্দু পুরোহিতকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র সহ খলিস্তানি যোগের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এই আবহে হরদীপ নিজ্জরের মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ধার্য করেছিল এনআইএ। জানা যায়, হরদীপ খলিস্তান টাইগার ফোর্সের প্রধান ছিল। গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের 'শিখস ফর জাস্টিস' সংগঠনের মতাদর্শ প্রচারের দায়িত্ব ছিল হরদীপের টাইগার ফোর্সের ওপর।