রেললাইনের বৈদ্যুতিক পোস্টে আটকে গিয়েছিল ঘুড়ি। তা পাড়তে গিয়ে ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল দুই নাবালকের। মৃতদের নাম হল ফয়েজ (১২) এবং সাজিদ (৮)। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সন্ধ্যায় উত্তর প্রদেশের সিবিগঞ্জ থানা এলাকার রোথা গ্রামের কাছে। ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় দুই নাবালকের দেহ। এমন ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে দুই নাবালকের পরিবারে।
আরও পড়ুন; ট্রেনের ধাক্কায় মৃত স্বামী ও মেয়েকে ফেলে দিয়ে চলে গেলেন মহিলা, হতবাক পুলিশ
ইন্সপেক্টর (আরপিএফ) মনোজ কুমার জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিবিগঞ্জ থানাকে এই ঘটনার বিষয়ে জানানো হয়েছিল। দুই নাবালক মহেশপুর আত্রিয়া ও রোথা মিলাক গ্রামের মধ্যবর্তী রেললাইনের ধারে একটি বৈদ্যুতিক পোস্ট থেকে ঘুড়ি পাড়ার চেষ্টা করছিল। সেই সময় সেই দুর্ঘটনা ঘটে। এর ফলে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।
জানা গিয়েছে, সিবিগঞ্জের মহেশপুর আত্রিয়া ও কিলা থানার সীমান্তে অবস্থিত মিলাক রোথা গ্রামে রেললাইনের পাশে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বাচ্চারা ঘুড়ি ওড়ায়। রবিবার সন্ধ্যাবেলাতেও তারা ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল। সেই সময় তাদের চোখে পড়ে একটি ঘুড়ি কেটে গিয়েছে। পরসৌনার বাসিন্দা ফয়েজ ও মহেশপুরের বাসিন্দা সাজিদ। তখন কেটে যাওয়া ঘুড়ি অনুসরণ করতে করতে তারা ছুটে যায়। অন্যান্য বাচ্চারা তখন ঘুড়ি ওড়ানোয় মগ্ন ছিল। কেউ বুঝে ওঠার আগেই রোথার রেললাইনে পৌঁছে যায় ওই দুজন। তাদের চোখ ছিল ঘুড়ির দিকে। সেই সময় আপলাইনে ট্রেন চলে আসে। তবে ঘুড়ির দিকে নজর থাকায় তারা ট্রেন আসার বিষয়টি বুঝতে পারেনি। তখনই ট্রেন এসে তাদের ধাক্কা মারে। এর ফলে দুজনেই অনেকটা দূরে ছিটকে পড়ে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
জানা গিয়েছে, ২২৪৫৩ মিরাট সিটি রাজ্রারানী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় দুই জনের। ট্রেনের লোকো পাইলট ঘটনাটি সম্পর্কে রেলের আধিকারিকদের জানান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আরপিএফ ও সিবিগঞ্জ থানার পুলিশ। এ সময় বাকরগঞ্জের কাছে একটি মালগাড়ি থামানো হয়।
সিবিগঞ্জ পুলিশ জানায়, সাজিদ মিলাক রোথায় তার দাদুর বাড়িতে থাকত। সে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাজিদ ছিলেন সবার ছোট। অনায়দিকে, ৪ ভাইবোনের মধ্যে ফয়েজ ছিল দ্বিতীয়। সাজিদের বাবা মাজলে ও ফয়েজের বাবা ফাইয়াজ শ্রমিকের কাজ করেন। মর্মান্তিক ঘটনা সত্ত্বেও ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়নি বলে জানান রেলের আধিকারিকরা। পুলিশ এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে।