ভারতরত্ন পাচ্ছেন প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবানি। শনিবার নিজেই সেই ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এমন একটা সময় তিনি সেই ঘোষণা করলেন, যখন লোকসভা ভোট শুরু হতে মেরেকেটে মাসদুয়েক বাকি আছে। আর অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার প্রতিষ্ঠার মেরেকেটে দু'সপ্তাহের মধ্যে আডবানিকে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হল। যে আডবানি নব্বইয়ের দশকে রথযাত্রা ছুটিয়েছিলেন। আর সেই 'রথ' ভারতীয় রাজনীতির নকশা পালটে দিয়েছিল। হিন্দুত্ববাদের পালে হাওয়া লেগেছিল। যে হাওয়ায় পরবর্তীতে নির্বাচনে বাজিমাত করেছে বিজেপি। সেই পরিস্থিতিতে রামমন্দিরের আবহেই রামজন্মভূমি আন্দোলনের ‘মুখ’ আডবানিকে ভারতরত্ন দেওয়া হওয়ায় বিশেষ তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: PM Modi in Ayodhya: 'আমাদের রামলালা আর তাঁবুতে থাকবেন না, আমাদের প্রভু রাম এসে গিয়েছেন', বললেন মোদী
মোদী কী বললেন?
শনিবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'এক্স'-এ আডবানির সঙ্গে দুটি ছবি পোস্ট করে মোদী লেখেন, 'আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে শ্রী লালকৃষ্ণ আডবানিজি'কে ভারতরত্ন প্রদান করা হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে কথাও বলেছি আমি। ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত হওয়ার জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছি। আমাদের সময়ের অন্যতম শ্রদ্ধেয় রাষ্ট্রনায়ক (হলেন আডবানিজি)। ভারতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে তিনি যে অবদান রেখেছেন, তা অভাবনীয়। তৃণমূল স্তরে কাজ করার মাধ্যমে তাঁর জীবন শুরু করেছিল। সেই তিনিই উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমাদের দেশের সেবা করেছেন। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী হিসেবে উনি নিজেকে পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন।'
লালকৃষ্ণ আডবানির রাজনৈতিক কেরিয়ার
আডবানির দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারের সূচনাটা কম বয়স থেকেই শুরু হয়েছিল। তাঁর সংসদীয় জীবন শুরু হয়েছিল ১৯৭০ সাল থেকে। সেই বছর সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় মনোনীত হয়েছিলেন। তবে প্রথম লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন ১৯৮৯ সাল থেকে। নয়াদিল্লি থেকে মোহিনী গিরিকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে আবার দুটি লোকসভা কেন্দ্র লড়েছিলেন - গুজরাটের গান্ধীনগর এবং নয়াদিল্লি। দুটি আসন থেকেই জিতেছিলেন। শেষপর্যন্ত গান্ধীনগর থেকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সেই আসন থেকেই ২০১৪ সালে নিজের শেষ নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন আডবানি।
আরও পড়ুন: 'লতাজি গান পাঠিয়েছিলেন, তা রথযাত্রার সিগনেচার টিউন হয়ে উঠেছিল', বললেন আডবানি
পরবর্তীতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছিলেন আডবানি। ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের সরকারে উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাঁকে বিজেপির কট্টরবাদী পথের অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে মনে করা হয়। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ ছিলেন। কিন্তু ২০০৫ সালে পাকিস্তান সফরে গিয়ে সংঘের রোষানলে পড়েছিলেন। পাকিস্তানের মহম্মদ আলি জিন্নার প্রশংসা করেছিলেন। যা একেবারেই ভালোভাবে নেয়নি সংঘ। তার জেরে বিজেপির সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।