রবিবার পর্যন্ত এমনিতেই লকডাউন ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় গুয়াহাটি-সহ কামরূপ মেট্রো জেলায় লকডাউনের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়াল অসম সরকার।
শনিবার সন্ধ্যায় একটি নির্দেশিকা জারি করে অসমের মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ জানান, রবিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ছ'টা থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত লকডাউন চলবে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘প্রায় পুরো কামরূপ জেলায় বেশি মাত্রায় কোডিভ-১৯-এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে, যা জনস্বাস্থ্য, স্বাস্থ্যবিধি এবং আমজনতার সুরক্ষার পক্ষে বড়সড় বিপদ হতে পারে।’
তবে কড়া নজরদারি, আইসোলেশন, অত্যধিক নমুনা পরীক্ষা-সহ কঠোর পদক্ষেপের ফলে গোষ্ঠী সংক্রমণের মাত্রা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি করেছেন অসমের মুখ্যসচিব। তিনি জানান, সেই ‘আশাব্যঞ্জক’ নিম্নগামী যে ধারা দেখা গিয়েছে, সেজন্য বিভিন্ন গতিবিধিতে বিধিনিষেধ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে।
নির্দেশিকা অনুযায়ী, আমজনতার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকছে। একইসঙ্গে দু'চাকা এবং চার চাকার ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলেও কঠোর বিধিনিষেধ থাকছে। শুধুমাত্র স্বাস্থ্যজনিত জরুরি কাজে ছাড় মিলবে।
সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, দোকান, বাণিজ্যিক গতিবিধি বন্ধ থাকবে। কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব এবং সুরক্ষা বিধি মেনে সোমবার থেকে শুক্রবার সকাল ন'টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত মুদিখানা এবং জনস্বাস্থ্যবিধির দোকান (ওষুধ) খুলবে। তবে সেগুলি পৃথক দোকান হতে হবে। অন্যদিকে, সোমবার থেকে শুক্রবার সকাল আটটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে আনাজ এবং ফল বিক্রি করা যাবে। ফল, আনাজ এবং অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ডেলিভারির জন্য সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টে পর্যন্ত ই-কমার্স সংক্রান্ত গতিবিধিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। সেটিও সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত চলবে।
যে কারখানাগুলিতে টানা কাজ চালিয়ে যেতে হয়, সেগুলি ছাড়া সব কারখানায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গণ পরিবহন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হসপিটালিটি সার্ভিস, ধর্মীয়স্থান সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। খেলাধূলো, সামাজিক, রাজনৈতিক, বিনোদন, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় জমায়েতে পুরোপুরি বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে।
লকডাউনের আওতার বাইরে কী কী থাকবে, দেখে নিন -
প্রতিরক্ষা এবং পুলিশ আধিকারিক, গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত সরকারি আধিকারিক, দমকল বিভাগ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, বিদ্যুৎ পরিষেবা, জল পরিষেবা, বর্জ্য ফেলার পরিষেবা, স্বাস্থ্যকর্মী, ব্যাঙ্ক পরিষেবা (খুব কম সংখ্যক কর্মী), এটিএম, দুধ সরবরাহ, বাচ্চাদের পণ্য, ওষুধ, টেলিকমিউনিকেশন, সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম, ট্রেন এবং বিমান পরিষেবা।
এদিকে, গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে কামরূপ মেট্রো জেলা থেকে আসা এবং সেখানে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ১২ টির বেশি জেলা। এছাড়া ডিমা হাসাও এবং জোরহাটেও সম্পূর্ণ লকডাউন জারি করা হয়েছে।