দিল্লির সংসদ ভবন হোক কিংবা রাজ্যগুলির বিধানসভা ভবন, প্রায়ই এমন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে হট্টগোল ও গোলমারে ছবি দেখা যায়। শুক্রবার এই ইস্যুতে বক্তব্য রাখেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তিনি বলেন, সংসদ ও রাজ্যরে বিধানসভাগুলিতে যেভাবে হই হট্টগোল হচ্ছে ও পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঝামেলা করা হচ্ছে, সেই ঘটনাগুলি নিয়ে তিনি রীতিমতো উদ্বিগ্ন।
অসম বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের শেষদিনে শুক্রবার সংসদে বক্তব্য রাখেন ওম বিড়লা। অসমে একদিনের সফরে গিয়ে তিনি এদিন ডিজিটাল পোর্টাল লঞ্চ করেছেন। ওম বিড়লা নিজের বক্তব্যে বলেন, 'কক্ষগুলির অভ্যন্তরে যেভাবে মর্যাদা ও শালীনতা হ্রাস পাচ্ছে তা আমাদের সকলের জন্য উদ্বেগের কারণ। আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এ বিষয়ে ভাবতে হবে।
আমাদের সমাবেশগুলিকে আলোচনা ও বিতর্কের জায়গা করতে হবে'। তিনি এও বলেন যে, 'সহমত পোষণ এবং মতবিরোধ থাকা উচিত এবং জনগণের প্রত্যাশা কক্ষে রাখা উচিত।' তবে তা নিয়ে হট্টগোল অনভিপ্রেত বলে তিনি বার্তা দেন। লোকসভার স্পিকার এদিন ভাষণে নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরও নিজেদের আদর্শ তুলে ধরার বিষয়েও সচেতন হতে বলেন।
অসম বিধানসভায় বক্তব্য রাখার সময় ওম বিড়লা বলেন, 'পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কার্যধারায় বাধা দেওয়া এবং সংসদের কার্যক্রম চলতে না দেওয়া আমাদের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অংশ নয়। আপনাদের কাছে আমার আবেদন, রাজ্যসভাগুলোকে ভালো বিতর্ক ও আলোচনার কেন্দ্র করে তুলুন, কিন্তু সেগুলোকে হট্টগোলের কেন্দ্রে পরিণত করবেন না।'
শুক্রবার অসম বিধানসভায় রাখা তাঁর বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষের কথা। 'আমাদের স্বাধীনতার পঁচাত্তম বার্ষিকী উপলক্ষে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা ও ডিবেটের মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্রের মর্যাদা উন্নত রাখার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আমি আশাবাদী আমরা সবাই মিলে সেই লক্ষ্যের দিকে কাজ করব', বলে মন্তব্য করেন ওম বিড়লা।
এছাড়াও তিনি নিজের ভাষণে দেশের গণতন্ত্রের ভিত্তি হিসাবে নির্বাচনের প্রসঙ্গটি তোলেন। 'আজ আমরা গর্ব করতে পারি যে আমাদের গণতন্ত্রে নির্বাচন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নাতীত। সে কারণেই সতেরোটি সাধারণ নির্বাচন এবং তিনশোটিরও বেশি বিধানসভা নির্বাচনে, ক্ষমতার যে মসৃণ হস্তান্তর হয়েছে, তা আমাদের গণতন্ত্রের শক্তি'। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বহু গণতন্ত্রেই দেখা গিয়েছে যে ক্ষমতার এমন মসৃণ হস্তান্তর সম্ভবপর হয়নি। লোকসভার স্পিকার এদিন বলেন, 'এটি আমাদের সংবিধানের শক্তি যার কারণে আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে আমরা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারগুলিতে বিশ্বাস করি।'