তন্ময় চট্টোপাধ্য়ায়
অবশেষে উত্তর সিকিমের সঙ্গে সড়ক সংযোগ করা হল। বৃহস্পতিবার সেনা বাহিনী এই রাস্তা তৈরির কাজ শেষ করেছে। চুংথাং এলাকায় ২০০ ফুটের বেইলি ব্রিজ তৈরির কাজও শেষ করা হয়েছে। জনসংযোগ আধিকারিক লেফটেনান্ট কর্নেল মহেন্দ্র রাওয়াত একথা জানিয়েছেন।
ত্রিশক্তি কর্পস ও বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের উদ্য়োগে এই রাস্তা ও ব্রিজ তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জনসংযোগ আধিকারিক লেফটেনান্ট কর্নেল মহেন্দ্র রাওয়াত জানিয়েছেন এটা হল ভারতের দীর্ঘতম সিঙ্গেল স্প্যান বেইলি ব্রিজ। সিকিমের রোডস ও ব্রিজ মন্ত্রী সমদূপ লেপচা এই ব্রিজের উদ্বোধন করেছেন।
৪ঠা অক্টোবর। তিস্তার হড়পা বানে ভেসে গিয়েছিল উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকা। আর্মি ক্যাম্প, সাধারণ মানুষের বাড়ি, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, বহু রাস্তা কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়।এমনকী সিকিমের লাইফলাইন বলে পরিচিত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মঙ্গনের পর থেকে গোটা এলাকা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর ফুট ব্রিজ ও জিপ লাইনস তৈরি করে চুংথাং ও সংলগ্ন এলাকায় উদ্ধারকাজ, খাবার ও ওষুধ পৌঁছোনর কাজ করা হয়।
এদিকে এই তিস্তা বিপর্যয়ের জেরে অন্তত ৯০জনের প্রাণ যায়। পাকিয়ং জেলায় অন্তত ২৩জন সেনা জওয়ান ভেসে যান। পরে ১০জন সেনার দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
বহু পর্যটক আটকে পড়েছিলেন দক্ষিণ সিকিমে। লাচেন, লাচুং সহ উত্তর সিকিমের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার কাজ করা হয়। সিকিম সরকার ২১টি ত্রাণ শিবির খুলেছিল। সেখানে প্রায় ৪০০০ ঘরছাড়া মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।
এবার ব্রিজের কথায় আসা যাক। ভারতের দ্বিতীয় দীর্ঘতম বেইলি ব্রিজ রয়েছে নাগাল্যান্ডের ছুবিতে। আসলে ব্রিটিশ সেনা ইঞ্জিনিয়ার ডোনাল্ড বেইলির নামে এই ব্রিজের নামকরণ করা হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই ধরনের দ্রুততার সঙ্গেই ব্রিজ তৈরির প্রয়োজন ছিল। এবার সিকিম বিপর্যয়ের পর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনতে দেশের দীর্ঘতম বেইলি ব্রিজ তৈরি করল সেনা।