ভালো কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলাদেশি তরুণীদের অবৈধভাবে নিয়ে আসা হত ভারতে। আর তারপরে তাদের আটকে রেখে নামানো হত দেহ ব্যবসায়। এরজন্য পাচারকারীরা একটি বাংলো ভাড়া নিয়ে সেখানেই চালাত এই ব্যবসা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ৭ বাংলাদেশি মহিলাকে উদ্ধার করেছে। এর পাশাপাশি ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাদের মধ্যে পাঁচ জন হল বাংলাদেশি নাগরিক। সোমবার মহারাষ্ট্রের মানপাদা থানার পুলিশ ডম্বিভলির হেদুথানে এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে এই চক্রের পর্দা ফাঁস করে।
আরও পড়ুন: কাজের লোভ দেখিয়ে যৌনপল্লিতে পাচারের ছক, শিলিগুড়িতে গ্রেফতার ৫ বাংলাদেশি মহিলা
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় যে বাংলাদেশিননাগরিকদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের নাম হল– ইউনুস শেখ ওরফে রানা, সাহিল শেখ, ফিরদৌস সরদার, আয়ুবলী শেখ, বিপ্লব খান এবং যোগেশ কালান। এরমধ্যে যোগেশ স্থানীয় বাসিন্দা। মূল অভিযুক্ত হল ইউনুস শেখ ওরফে রানা গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্তদের কাছ থেকে কোনও বৈধ আইনি নথিপত্র পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ভিত্তিক একটি এনজিওর কর্মকর্তা মুক্তা দাস গত ৫ অক্টোবর পুনের ফ্রিডম ফার্ম এনজিওকে রানার সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, চাকরি দেওয়ার নাম করে এক মহিলাকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখে এবং তাঁকে বারবার ধর্ষণ করে। এরপর পুনের এনজিও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ঘটনায় মানপাদা পুলিশ একটি দল গঠন করে ৭ অক্টোবর গভীর রাতে হেদুথানে এলাকায় অবস্থিত একটি বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানেই পুলিশ এক নাবালিকা এবং আরও ৬ জন বাংলাদেশি মহিলাকে খুঁজে পায় এবং তাদের উদ্ধার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, মূল অভিযুক্ত রানা তাদের ভারতে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসত এবং টাকার বিনিময়ে মানুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করত।
মানপাদা থানার ওসি সুনীল তরলামে জানান, তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের দুই অফিসার এবং দশজন পুলিশ কর্মী সেখানে তল্লাশি চালায়। তবে অভিযুক্তরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। প্রযুক্তির সাহায্যে পরে অভিযুক্তদের একটি জঙ্গল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি, মানব পাচার প্রতিরোধ আইন এবং বৈদেশিক আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে ২৫টি আধার কার্ড, ১০টি প্যান কার্ড এবং চারটি জন্ম শংসাপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। ধৃতদের আদালতে তোলা হলে তাদের ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।