বছর শেষে ফের একবার অশান্ত হয়ে উঠল মণিপুর। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে মণিপুর জুড়ে বিরাজ করেছে উত্তেজনা। মেইতেই বনাম কুকি সংঘর্ষে বারংবার উত্তপ্ত হয়েছে সেই রাজ্য। এই আবহে শনিবার রাতে সীমান্তবর্তী শহর মোরে-তে পুলিশ কমান্ডোদের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। আরপিজি ছোড়া হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে। এতে পুলিশের ব্যারাক বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই আবহে চারজন জখম হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর আগে গতকাল বিকেলেই ইম্ফল-মোরে হাইওয়েতে পুলিশের ওপর হামলা হয়েছিল। সেই হামলায় একজন পুলিশকর্মী জখম হয়েছিলেন। এই বিষয়ে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, বিকেলে হাইওয়ের হামলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে রাতে আবার পুলিশের ওপর হামলা হয়। জখম কমান্ডোদের স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। এদিকে এই ঘটনার পর অসম রাইফেলসের উচ্চপদস্থ কর্তারা আসেন ঘটনাস্থলে। সেখানে কার্ফু জারি করা হয়। (আরও পড়ুন: ৪১ নিয়ে ঘামাবেন না মাথা? ২৪-এ শুধু ডায়মন্ডে অভিষেক, মানাতে পারলেন না কুণালরাও)
আরও পড়ুন: অভিমান? দলীয় নেতৃত্বের একাংশের ওপরই ক্ষুব্ধ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দাবি রিপোর্টে
উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘জঙ্গিরা’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই আবহে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে।
প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মেইতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছিল যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছিল স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে কুকি আদিবাসী বনাম মেইতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসা প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশো সাধারণ মানুষ।