মায়ের কাছে কতটা নিরাপদে থাকে শিশু? এনিয়ে কেরল হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, একজন শিশুর ভালোভাবে থাকার ক্ষেত্রে একজন মাকে কখনই খারাপ বলে গণ্য করা যায় না। সমাজের চোখে তিনি নৈতিকভাবে খারাপ হতে পারেন। কিন্তু তিনি একজন শিশুর দেখভালের ক্ষেত্রে খারাপ বলে গণ্য হতে পারেন না। বিচারপতি এ মহম্মদ মুস্তাকি ও সোফি থমাসের ডিভিভালোশন বেঞ্চ জানিয়েছেন, সমাজের এই নীতি বোধের বিষয়টি তাদের রীতিনীতি ধ্যান ধারণার উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে। এটা একজন বাবা মায়ের সঙ্গে শিশুর সম্পর্কের উপর প্রতিফলিত হয় না।
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, একজন শিশু কার কাছে থাকবে সেটা নিয়ে সবার আগে দেখতে হয় কার কাছে সে ভালো থাকবে। একজন পুরুষ অথবা নারী সমাজের চোখে খারাপ হতেই পারেন কিন্তু তিনি শিশুর কাছেও খারাপ হবেন এমনটা হতে পারে না। সমাজের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে হয়তো তিনি নৈতিকভাবে খারাপ কিন্তু শিশুর কাছে তিনিই ভালো মা। শিশুর কল্যাণের জন্য তিনিই উপযুক্ত মানুষ।
আসলে একটি পারিবারিক আদালত এক নাবালকের দেখাশোনার দায়িত্ব তার বাবার হাতে তুলে দিয়েছিল। এনিয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে গিয়েছিলেন মা।
বার অ্যান্ড বেঞ্চের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, মা এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন। নিজের সুখের জন্য তিনি পালিয়ে যান। সেকারণেই পারিবারিক আদালত সেই শিশুর দায়িত্ব বাবার হাতে দেন। এদিকে আবেদনকারী মা জানিয়েছেন, স্বামীর সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। তার জেরেই তাকে জোর করে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আবেদনকারীর বাবা জানান, এই বিয়ের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মেয়ে ভাইয়ের এক বন্ধুর সঙ্গে গিয়ে থাকছিল। এটা বোঝানোর চেষ্টা মেয়ে করেছিল যে সে যেন কারোর সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেটা নয়।
তবে স্বামীর দাবি, তার স্ত্রী অপর যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল। আদালত জানিয়েছে, দুজনের বিবৃতি বিশ্বাস করা যাচছে না। তবে পারিবারিক আদালত যে ভাষা প্রয়োগ করেছে এটা ঠিক নয়।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, ওই মহিলা চলে গিয়েছেন, তারপর তাকে একজনের সঙ্গে দেখা যায় তার মানেই তিনি শিশু কল্য়াণের জন্য উপযুক্ত নন, এই সিদ্ধান্তে আসা যায় না।
তাছাড়া কোনও মহিলা শুধু শারীরিক সুখের জন্যই চলে যান এই সিদ্ধান্তে আসাটা ঠিক হবে না। পর্যবেক্ষণ আদালতের।