ভারত থেকে পালিয়ে যাওয়া নীরব মোদী লন্ডন আদালতে জানিয়েছেন, মনে হচ্ছে এই বছরের কোনও একটা সময় তাঁর জেল থেকে মুক্তি হবে। বৃহস্পতিবার তিনি একথা জানিয়েছেন। একটা জরিমানা তিনি আগে দেননি। সেই সূত্র ধরে তাকে আদালতে তোলা হয়েছিল।
থামেসাইড জেল থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে তিনি আদালতে হাজিরা দেন। প্রায় ১.৬ কোটি টাকার জরিমানা তিনি মেটাননি। গত ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ সালে বিচারপতি স্টুয়ার্ট স্মিথ হাইকোর্টে তার উপর এই জরিমানা আরোপ করেছিল। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে আদালত জানতে পারে যে ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি আটবার পেমেন্ট করেছেন। কিন্তু এখনও ৭৩ লাখ টাকা বকেয়া থেকে গিয়েছে। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে।
কিন্তু কেন তিনি এই জরিমানা দেননি? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি একেবারে আমেরিকান উচ্চারণে বলেন, আমি জেলে রয়েছি। এখান থেকে যতটা জোগাড় করা যায় সবই করছি। মার্চ এপ্রিলের মধ্য়ে ফের দিতে পারব বলে মনে হচ্ছে। এদিকে নীরব একেবারে সবুজ জামা, জিনস পরেছিলেন। বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন তিনি। তিনি যে ভিডিয়ো লিঙ্কে শুনতে পাচ্ছেন এটা বোঝানোর জন্য তিনি দুটো থাম্বস আপও দেখান।
ক্লার্ক বলেন, আপনি যদি জরিমানা না দেন তবে আপনার বিরুদ্ধে আবার নতুন রায় দেওয়া হবে। আপনি জেলেই আছেন।
নীরব বলেন, আমি তো পাঁচ বছর জেলে রয়েছি দোষী সাব্যস্ত না হয়েই। ক্লার্ক বলেন, কখন আপনি ছা়ড়া পাবেন এনিয়ে কোনও তারিখের কথা মাথায় আসছে?
নীরব বলেন, আশা করছি এই বছরের কোনও দিন ছাড়া পেয়ে যাব।
পাঞ্জাব ন্য়াশানাল ব্যাঙ্কের ৭০০০ কোটির আর্থিক তছরূপের মামলায় অভিযুক্ত তিনি। এরপরই তিনি বিদেশ পালিয়ে যান।
এদিকে গত নভেম্বর মাসে দীর্ঘ সময় ধরে ব্রিটেনে থাকতে হতে পারে বলে আদালতকে জানিয়েছিলেন পলাতক হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী। পূর্ব লন্ডনের বার্কিংসাইড ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার শুনানির সময় একথা বলেন নীরব মোদী। তাঁর বক্তব্য, কিছু আইনি প্রক্রিয়ার কারণে তাঁর প্রত্যর্পণ স্থগিত হতে পারে। সেই কারণে দীর্ঘ সময় ধরে তাঁকে বৃটেনে থাকতে হতে পারে। উল্লেখ্য, বর্তমানে বৃটেনের একটি জেলে রয়েছেন নীরব মোদী। তাঁর প্রত্যর্পণের আপিল সম্পর্কিত খরচের জন্য লন্ডনের আদালত ১.৪ কোটি টাকা জরিমানা করেছিল।
এর আগে মামলার শুনানিতে নীরব মোদী আদালতের তিন সদস্যের ম্যাজিস্ট্রেট বেঞ্চকে বলেছিলেন, তিনি প্রতি মাসে ১০ হাজার পাউন্ড জরিমানা দেওয়া নিয়ে আদালতের নির্দেশ মেনেছেন। এরপর জেলে থাকার কারণ আদালত জানতে চাইলে নীরব আদালতকে বলেন, ‘আমি রিমান্ডে জেলে আছি এবং অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। ভারত সরকারের প্রত্যর্পণের অনুরোধের কারণে আমি জেলে আছি।’