আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সংকটের ছাপ পড়ল নোবেল ফাউন্ডেশনের সিদ্ধান্ততেও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নোবেল ফাউন্ডেশন গত শনিবার তার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়ে জানিয়েছে তারা এই বছর স্টকহোমে নোবেল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে না রাশিয়া, বেলারুশ এবং ইরানের রাষ্ট্রদূতদের। প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার নোবেল ফাউন্ডেশন ঘোষণা করেছিল, এই বছরের শেষে ডিসেম্বরে নোবেল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন এই তিনটি দেশের রাষ্ট্রদূত, এমন কি যে সকল দেশ কোনও দিন নোবেল পুরস্কার পায়নি, তারাও। অবশেষে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে হল নোবেল ফাউন্ডেশনকে।
উল্লেখ্য নোবেল ফাউন্ডেশন গত বছর ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের কারণে রাশিয়া ও তার মিত্র বেলারুশের রাষ্ট্রদূতদের বাদ দিয়েছিল। হিজাববিরোধী বিক্ষোভ দমনের কারণে ইরানের বিরুদ্ধে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই তিনটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি নিয়ে সুইডেনের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতা তীব্র সমালোচনা করায় বিপাকে পড়ে নোবেল কমিটি। বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্তটির লক্ষ্য ছিল, নোবেল পুরস্কার এবং তার মূল্যবোধ সারা বিশ্বে আরও ব্যাপক পরিমাণে ছড়িয়ে দেওয়া, এমনই জানিয়েছে নোবেল ফাউন্ডেশন।
দ্যা গার্ডিয়ান সূত্রে খবর, ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিকোলেনকো ফেসবুকে জানিয়েছেন, নোবেল ফাউন্ডেশনের উচিত রাশিয়া এবং বেলারুশকে ছিন্ন করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা। কারণ লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনবাসী বিনা প্ররোচনায় রুশ আক্রমণের শিকার হচ্ছে এবং রাশিয়া সরকার তার যুদ্ধ অপরাধের জন্য কোনও রকম শাস্তি পাচ্ছে না। এমনকি সুইডিস প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনও ফাউন্ডেশনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত ছিলেন না। এই বাস্তবতাতেই নোবেল কমিটি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে।
এই তিনটি দেশকে নোবেল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছে না নোবেল কমিটি। গার্ডিয়ানে বিবৃতি দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যদি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণগুলি পাঠাতাম, তবে আমি এ’রকম কখনওই করতাম না। আমি বুঝতে পারছি এই সিদ্ধান্ত সুইডেন এবং ইউক্রেনের অনেক মানুষকেই বিরক্ত করেছে।’ ভূ-রাজনৈতিক সংকট বারংবার আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে। এবারও মার্কিন ও ইউরোপিয়ান ব্লকের চাপে নোবেল কমিটির এই সিদ্ধান্ত বদল, ফের আন্তর্জাতিক মঞ্চে একঘরে মস্কো।