রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে উল্লেখযোগ্য রায় দিল লাহোর হাইকোর্ট। পাকিস্তানের নিরিখে লোহার হাইকোর্টের এই রায় নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। বৃহস্পতিবার আদালতের তরফে বলা হয়েছে, এই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাকস্বাধীনতার বিরোধিতা করে। এই রায়ের জেরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে পাকিস্তানে। তবে এখন গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের উপর। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের বিরোধিতা না করলে গোটা পাকিস্তানে এই রায় কার্যকর হতে পারে বলে খবর।
বিচারপতি শাহিদ করিম রায় জানিয়েছেন, এই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন আসাংবিধানিক।
এবার এই আইনের পেছনের পটভূমিকা একবার দেখে নেওয়া যাক। রাজনৈতিকভাবে যারা বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে এই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন প্রয়োগ করা হয় বলে বার বার বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হত। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধেও এই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে খবর। এদিকে একাধিক সাংবাদিক,সমাজকর্মী, আইনজীবী সহ অনেকেই এই রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে মুখ খুলছিলেন। তারা আবেদন করেছিলেন, এই আইনের মাধ্যমে বাক স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়। সেক্ষেত্রে এভাবে কোনও আইন বাক স্বাধীনতাকে হরণ করছে এটা কিছুতেই মানতে পারছিলেন না তারা। কারণ রাষ্ট্রের কোনও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেই এই আইন প্রয়োগ করা হত। এবার সেই আইনের বাতিলের দাবিতে সরব হয়েছিলেন তাঁরা। এটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার প্রতীক বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল আদালতে।
এদিকে পাক সংবিধানে বাক স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য়দিকে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের মাধ্যমে বাক স্বাধীনতাকেও হরণ করা হচ্ছিল। এই দ্বিচারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন আবেদনকারীরা। তবে সেই প্রসঙ্গেই এবার তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিল লাহোর হাই কোর্ট।
এদিকে পাকিস্তানে বাক স্বাধীনতাকে গলা টিপে হত্যা করা হয় বলে বার বারই অভিযোগ ওঠে। বিরোধী কণ্ঠস্বরকে রদ করার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। মূলত প্রতিবাদকারীদের আওয়াজকে বন্ধ করার জন্য় নানা দমন পীড়ন করা হয় বলে অভিযোগ। শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে বর্তমান পাক সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে বার বারই। এমনকী পাক আদালতের ক্ষমতা খর্ব করার জন্যও নানা চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। তবে এবার লাহোর হাইকোর্টের এই রায়ের জেরে বর্তমান পাক সরকার কিছুটা অস্বস্তিতে পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে। কিন্তু এই রায়ের জেরে এবার বিরোধী কণ্ঠস্বর পাকিস্তানে কতটা গুরুত্ব পায় সেটাও দেখার।