সংসদে হামলার ঘটনার মাস্টারমাইড কি আসলে অন্য কেউ ছিল? তদন্ত নেমে আপাতত সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট যে রীতিমতো পরিকল্পনা করে সংসদে সেই 'হামলা' চালানো হয়েছে। নজরে এসেছে 'ভগৎ সিং ফ্যান ক্লাব' নামে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পেজ। তারইমধ্যে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের (UAPA) আওতায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে বিভিন্ন বিষয়। তবে সংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যে বড়সড় গলদ ছিল, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই গোয়েন্দাদের। আর তাতে কার্যত সিলমোহর দিয়েছে লোকসভার সচিবালয়। কারণ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ কমিটির তদন্তের মধ্যেই সংসদ ভবনের সুরক্ষা ব্যবস্থায় গলদ থাকার ঘটনায় আট নিরাপত্তা আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
সুরক্ষা ব্যবস্থায় গলদ নিয়ে সেই তৎপরতার মধ্যেই একাধিক বিষয় ভাবাচ্ছে দিল্লি পুলিশকে। সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে যে ব্যক্তিকে মাস্টারমাইড হিসেবে মনে করা হয়েছিল, সেই ব্যক্তি আদতে মূল চক্রী নয়। বরং অপর এক ব্যক্তি ওই ঘটনার মাস্টারমাইড বলে মনে করা হচ্ছে। বুধবারের ঘটনার আগে ওই ব্যক্তি সংসদ ভবনের চত্বরে রেকি চালিয়েছিল বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০১ সালের সংসদ হামলার বর্ষপূর্তির দিনে সেই হামলার ঘটনা ঘটলেও গত জুলাইয়ে শীতকালীন অধিবেশনের সময়ও সংসদ ভবনে ঢোকার চেষ্টা করেছিল সাগর শর্মা। যে সাগর বুধবার মনোরঞ্জন ডি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে লোকসভাকক্ষে ঢুকে পড়ে হলুদ ধোঁয়া ওড়াতে থাকে। সংসদ ভবনের বাইরেও একই কাজ করে দু'জন (নীলম দেবী এবং অমল শিণ্ডে)। আর যে ক্যানিস্টার থেকে সেই হলুদ ধোঁয়া ছড়ানো হয়, তা ইন্ডিয়া গেটের সামনে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। যারা ১০ ডিসেম্বর সেখানে জমায়েত হয়েছিল।
অর্থাৎ পুরোটা যে একেবারে ছক কষে করা হয়েছিল, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই পুলিশের। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা এবং UAPA ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। চারজনকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি কয়েকজনকে জেরা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে ললিত ঝা নামে যে ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে, তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজস্থানে শেষবার ললিতের হদিশ মিলেছিল।