গোপনে পর্ণগ্রাফি বা অশ্লীল ভিডিয়ো দেখা অপরাধের মধ্যে পড়ে না। যতক্ষণ কোনও পুরুষ–মহিলা এককভাবে দেখছে। অন্যকে বিরক্ত না করে, দেখতে বাধ্য না করে কেউ গোপনে পর্ণগ্রাফি বা অশ্লীল ভিডিয়ো দেখলে সেটাকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা যাবে না। এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এমনই রায় দিয়েছে কেরল হাইকোর্ট। আর তাতে এক ব্যক্তি অপরাধের তকমা পাওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, কেরল হাইকোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিষয়টিকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯২ নম্বর ধারার মধ্যে গ্রাহ্য করা হবে না।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? ২০১৬ সালের জুলাই মাসে কেরলের এর্নাকুলাম জেলার এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, রাতের অন্ধকারে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পর্নগ্রাফি দেখছিলেন এই অভিযুক্ত ব্যক্তি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। দু’পক্ষের কথা শুনে সেই মামলার শুনানি শেষ হয়। তারপরই গোপনে একা পর্ণগ্রাফি দেখা নিয়ে এমনই মন্তব্য করেন কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি পি ভি কুহ্নিকৃষ্ণণ। এমনকী ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চলা ফৌজদারি মামলা খারিজ করে দেন।
ঠিক কী বলেছেন বিচারপতি? এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি পুরো বিষয়টি মন দিয়ে শোনেন। পুলিশের তথ্যেই দেখতে পান, ওই ব্যক্তি কাউকে বিরক্ত করেননি। কাউকে জোর করে পর্ণগ্রাফি দেখাননি। কাউকে বাধ্য করেননি অশ্লীল ভিডিয়ো দেখতে। তারপরই রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি ভরা এজলাসে বলেন, ‘পর্নগ্রাফি দেখা একজন নাগরিকের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ইচ্ছা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি কি কাউকে বিরক্ত করছিলেন? আদালত কারও ব্যক্তিগত ইচ্ছায় নাক গলায় না। তাই ওই বিষয়টিকে কখনও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যাবে না।’
আরও পড়ুন: আবার রাতে নয়া নির্দেশ জারি করলেন রাজ্যপাল, নয়া কর্মসূচির নাম ‘স্পিড প্রোগ্রাম’
আর কী জানা যাচ্ছে? এমনকী ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯২ নম্বর ধারার কথাও উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। বিচারপতির বক্তব্য, ‘যদি কেউ প্রকাশ্যে কোনও অশ্লীল ভিডিয়ো বা ছবি দেখেন এবং সেই ছবি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তাহলে সেই বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। বহু বছর ধরেই পর্নগ্রাফি রয়েছে। কিন্তু এখন ইন্টারনেটের দৌলতে তা খুবই সহজলভ্য হয়ে গিয়েছে। শিশুরা হাতে মোবাইল ফোন পেয়েই যদি পর্নগ্রাফি দেখে তাহলে তা খুবই চিন্তার বিষয়। সে বিষয়ে সতর্ক থাকার দরকার।’