ভোটের আর মাস দুয়েক বাকি। তার আগেই দ্রুত বদলাচ্ছে পুদুচেরির রাজনৈতিক সমীকরণ। লাগাতার চারজন কংগ্রেস বিধায়কের ইস্তফার পরে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে আচমকাই রাষ্ট্রপতি ভবন জানালো যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পুদুচেরির লেফট্যানেন্ট গভর্নর কিরণ বেদীকে। আপাতত তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলসাই সৌন্দরারাজনরে অস্থায়ী ভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলাতে বলা হয়েছে যতদিন নয়া এলজি নিযুক্ত হয়।
রাষ্ট্রপতি ভবনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে আজ থেকেই এই দায়িত্ব আর পালন করবেন না কিরণ বেদী। প্রসঙ্গত দিল্লিতে বিজেপির মুখ ছিলেন কিরণ বেদী ২০১৫-র ভোটে। সেই ভোটে উড়ে যায় বিজেপি। তার পর এই প্রাক্তন পুলিশ অফিসারকে কেন্দ্রীয় শাসিত পুদুচেরির এলজি করে দেওয়া হয়। সেখানে পদে পদে নারায়ণস্বামী সরকারের সঙ্গে সংঘাত বেঁধেছে এই একদা দুঁদে পুলিশ অফিসারের। তবে কিরণ বেদীকে সরিয়ে রাজনৈতিক চালই খেলল বিজেপি বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, যে দুই কংগ্রেস বিধায়ক আগের মাসে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত একজনের পূর্বশর্ত ছিল যে কিরণ বেদীকে সরাতে হবে। এছাড়াও কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল যে কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলে কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন তিনি। তাঁকে সরিয়ে দিয়ে সেই অস্ত্রটাও ভোঁতা করার চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
নয়া বছরের প্রথম মাসেই ইস্তফা দেন কংগ্রেস সরকারের দুই মন্ত্রী এ নমসসিবায়ম এবং ই থিপাপেনদান। যোগ দেন বিজেপিতে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই সোমবার ইস্তফা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাল্লাদি কৃষ্ণা রাও। পরদিনই জনের ইস্তফার ফলে পুদচেরিতে কংগ্রেস বিধায়কের সংখ্যা কমে দাঁড়াল ১০। তার আগে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য গত বছর জুলাই কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন বিধায়ক এ ধানাভেলু।
এমনিতে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ৩০ টি আসন-বিশিষ্ট পুদুচেরিতে ১৫ টি আসনে জয়লাভ করেছিল কংগ্রেস। সমর্থন দেন ডিএমকের তিনজন এবং একজন নির্দল বিধায়ক। কিন্তু নির্দল বিধাযক এবং ডিএমকের সমর্থন নিয়ে এখন কংগ্রেস সরকারের হাতে আছে ১৪ জন। অন্যদিকে বিরোধী এআইএডিএমক এবং অল ইন্ডিয়া এনআর কংগ্রেসের দখলে আছে যথাক্রমে চারটি এবং সাতটি আসন। সঙ্গে বিধানসভায় বিজেপির তিনজন মনোনীত সদস্য আছেন। তার জেরে স্বভাবতই ভোটের মাত্র মাসদেড়েক আগে পুদুচেরিতে কংগ্রেস সরকারে সংকট তৈরি হয়েছে।
এর মধ্যেই কিরণ বেদীকে সরানোর সিদ্ধান্ত কাকতালীয় নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।